পিরিয়ডের সময়টা বেশিরভাগ মেয়ের জন্যই কষ্টদায়ক। এসময় গ্যাস্ট্রিক, বমি ইত্যাদির সঙ্গে বেড়ে যায় পেট ব্যথাও। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পেইন কিলার খেতে থাকলে তা নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আসতে পারে। ওষুধের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে এই ব্যথা উপশম করা সম্ভব। জেনে নিন পিরিয়ডের ব্যথা থেকে বাঁচতে কোন ধরনের খাবার খাবেন-

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

মাসের নির্দিষ্ট দিনগুলোতে শরীর থেকে অনেকটা রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার কারণে নারীর শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। যে কারণে ক্লান্তি ও আলস্য আসে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা ও ক্লান্তি দেখা দেয়। তাই নারীর প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখা জরুরি সবুজ শাক-সবজি, বেদানা, খেজুর, বিটের মতো আয়রন সমৃদ্ধ খাবার।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ সহজে বের করে দেয়। সেইসঙ্গে  অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ অপসারণ করার প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দেয় এই উপাদান। যে কারণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে পেটে ব্যথা অনেকটাই কমে যায়। সেইসঙ্গে এটি অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যাও দূর করে।

তুলসি পাতাও উপকারী

উপকারী একটি ভেষজ হলো তুলসি পাতা। এতে থাকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন-মিনারেল, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও প্রোটিন। এই পাতা পিএমএস উপশমেও সাহায্য করে। তুলসি পাতা খেলে তা শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং মাসিক চক্র নিয়মিত করতেও সাহায্য করে। তাই পিরিয়ডে পেট ব্যথা থেকে বাঁচতে নিয়মিত তুলসি পাতার রস খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ঘি খেলে ব্যথা দূর হয়

ঘি এর আছে অনেক উপকারিতা। সুন্দর গন্ধ ও স্বাদের জন্য এটি সবার কাছেই পছন্দের। পিরিয়ডের সময়ে প্রতিটি খাবারের সঙ্গে এক চা চামচ ঘি মিশিয়ে খান। এতে পিরিয়ড সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর হবে। সেইসঙ্গে মিলবে আরও অনেক উপকারিতা।

হলুদ খাবেন যে কারণে

হলুদে আছে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টধর্মী উপাদান। এটি পিরিয়ডের সময় হরমোনজনিত ভারসাম্য রক্ষা করতে কাজ করে। এতে থাকা অ্যান্টিস্পাসমোডিক ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান পিরিয়ড ও পিএমএস এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করে। হলুদ ও আদার মিশ্রণ খেলে তা মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ১ চা চামচ হলুদ ও ১ টেবিল চামচ আদা পানিতে ফুটিয়ে হালকা গরম অবস্থায় পান করুন।

পানি পান করুন

পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প নেই। শরীরে পানির ঘাটতি না থাকলে যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা অনেক সহজ হয়ে যায়। পিরিয়ডের সময়ে অনেকের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা বা পেট ফোলার মতো সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা কমাতে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। হালকা গরম পানি পান করলে তা পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথা কমাতে কাজ করে।

ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

জরায়ুর পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে ম্যাগনেশিয়াম নামক উপকারী উপাদান। যে কারণে কমে পিরিয়ডের সময়ে পেটে ব্যথা। তাই পিরিয়ডে পেটে ব্যথা এড়াতে খেতে হবে ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। এই তালিকায় রয়েছে ডার্ক চকোলেট, অ্যাভোকাডো, ছোলা, মটর, টোফু, দানা শস্য ইত্যাদি।