বিয়ের প্রস্তাব পেয়েই ‌‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছেন? যদিও আপনার জীবন, আপনার সিদ্ধান্ত। কিন্তু এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াও ঠিক নয়। কারণ জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি হলো বিয়ে। জীবনসঙ্গী মানে বাকি জীবন একসঙ্গে পথচলা। তাই জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই তাড়াহুড়ো করা যাবে না।

প্রস্তাবের বিয়েতে তো অবশ্যই, প্রেমের বিয়ের ক্ষেত্রেও বিয়ের আগেই কিছু বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। কারণ প্রেম আর বিয়ে এক জিনিস নয়। বিয়ের পরে অনেককিছুই বদলে যায় বা যেতে পারে। অনেক সময় আবেগ আর প্রেমের বানে ভেসে আমরা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। সিদ্ধান্তটি যে ভুল, সেটি বুঝতে বুঝতে আমরা হারিয়ে ফেলি অনেককিছুই। বিশেষ করে হারানো সময়টা আর ফিরে আসে না। তাই সিদ্ধান্ত যখন নেবেন, ভেবেচিন্তে তারপর নিন। মেয়েরা বিয়ের আগে হবু স্বামীকে এই প্রশ্নগুলো করবেন-

আপনি চাকরিজীবী হলে

আপনি যদি ইতিমধ্যেই চাকরি শুরু করেন তবে বিয়ের আগে হবু স্বামীর সঙ্গে সেই বিষয়ে কথা বলে নিন। কারণ বিয়ের পরে আপনার ক্যারিয়ারে প্রভাব পড়তে পারে। আপনি যদি বিয়ের পরে চাকরি ছাড়তে রাজি না থাকেন তবে তা আগেই জানিয়ে দিন। সম্পর্ক ও ক্যারিয়ার দুটোই গুরুত্বপূর্ণ হলে সমঝোতা করে নিন। আপনার হবু স্বামীকে প্রশ্ন করুন, আপনার চাকরি করার স্বাধীনতায় তিনি কখনো হস্তক্ষেপ করবেন কি না? এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলে স্বচ্ছ ধারণা নিন।

তার ভবিষ্যৎ ভাবনা

শুধু বর্তমানের দিকে না তাকিয়ে তার ভবিষ্যৎ ভাবনা সম্পর্কে জানতে চান। তিনি ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছেন সেটি জানা আপনার জন্য জরুরি। কারণ বিয়ের পর পরস্পরের জীবন জড়িয়ে যাবে একই পথে। তাই তার ভবিষ্যৎ মানে আপনারও ভবিষ্যৎ। তিনি কি বড় কোথাও ইনভেস্টমেন্ট করেছেন, সেভিংস নিয়ে তার কী ভাবনা সব জেনে নিন। কেন এসব বিষয়ে জানতে আগ্রহী, সেকথাও তাকে বুঝিয়ে বলুন।

কেন তিনি আপনাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চান? 

অনেকের ভিড়ে কেন তিনি আপনাকেই বেছে নিলেন এই কারণ জেনে নেওয়া জরুরি। তিনি আপনার কোন গুণ দেখে পছন্দ করেছেন তা আপনার হবু স্বামীর কাছে জানতে চান। তিনি কী উত্তর দেন তা খেয়াল করে শুনুন। তিনি আপনার ছোট ছোট গুণগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছেন কি না, তা দেখে নিন। আপনার ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি দুর্বলতাগুলোও যেন সহজে গ্রহণ করতে পারেন, তা আগেই জানিয়ে রাখুন। নয়তো বিয়ের পরে সমস্যা হতে পারে।

বিয়েতে তার মত আছে কি না?

প্রেমের বিয়েতে এই প্রশ্ন করার দরকার নেই হয়তো, তবে প্রস্তাবের বিয়েতে অবশ্যই জিজ্ঞেস করে নিতে হবে। নয়তো বিয়ের পর এমনও হতে পারে, আপনার স্বামী হয়তো বললেন, ‘এই বিয়েতে আমার মত ছিল না, মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তোমায় বিয়ে করেছি!’ এমনটা হলে আপনার জীবন জাহান্নাম হতে সময় লাগবে না। নিজেকে কেন অন্য কারও অনুগ্রহের পাত্রী করতে যাবেন? বরং বিয়ের আগেই ভালো করে জেনে নিন, এই বিয়েতে তার মত আছে কি না। 

চিন্তাধারার মিল কতটুকু

বলছি না যে দুজনের চিন্তাধারায় শতভাগ মিল থাকতে হবে। সেটি সম্ভবও নয়। কারণ প্রত্যেক মানুষই আলাদা, তাদের চিন্তাধারাও আলাদা। তাই বলে যে চিন্তার দিক থেকে দুজন দুই মেরুর হবেন, এমনটা হলেও মুশকিল। তাই বিয়ের আগেই আপনার হবু স্বামীকে প্রশ্ন করে জেনে নিন আপনাদের চিন্তাধারার মিল কতটুকু। দুজনের ব্যবহার, চলাফেরা ইত্যাদির দিক খেয়াল করলেও বুঝতে পারবেন।