চৈত্রের শেষ দিক। বৈশাখ আসি আসি করছে। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে প্রচন্ড তাপ প্রবাহ। আবহাওয়াবিদদের মতে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। তার ওপর পবিত্র রমজান মাস। এই প্রচন্ড তাপ প্রবাহে শিশুসহ সবারই নাভিশ্বাস উঠে গেছে। প্রচন্ড এই তাপ প্রবাহের একটি মারাত্মক দিক হলো হিট স্ট্রোক।

শ্রমজীবী মানুষ, গার্মেন্টস কর্মী, খোলা মাঠে কৃষিকাজ যারা করেন এবং প্রচন্ড তাপদাহে যারা রিকশা ও যানবাহন চালান, তাঁরাই বেশি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই হিট স্ট্রোকের ফলে অনেক সময় মৃত্যুও হতে পারে। তাই আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। এই গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল-

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ

* শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে যায়।

* প্রচন্ড মাথা ব্যাথা ও বমি বমি ভাব

* গায়ের চামড়া লাল, শুকনো, খসখসে হয়ে যায়।

* পালস ভলিউম বেড়ে বা কমে যায়।

* অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

* শিশুদের নিয়ে যথাসম্ভব কম বাসা থেকে বের হওয়া উচিত।

* বাসার পরিবেশ ভ্যাঁপসা যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। বৈদ্যুতিক পাখা, এয়ার কুলার, এসি এসবের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়।

* পাতলা, সুতির আরামদায়ক পোশাক পরবেন।

* প্রতিদিন গোসল নিশ্চিত করা দরকার।

* প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সহজপাচ্য খাবার, তরল খাবার, ফলের রস রাখবেন।

* বাসা থেকে বের হলে অবশ্যই ছাতা, সানগ্লাস সঙ্গে রাখবেন।

* সব সময় খাবার পানি সঙ্গে রাখবেন।

হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে করণীয়

* হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ছায়ায় সরিয়ে নিতে হবে এবং তার পোশাক ঢিলেঢালা করে দিতে হবে।

* বরফ বা ঠান্ডা পানি শরীরের ভাঁজে, গলার নিচে, বগল বা কুঁচকিতে লাগাতে হবে এবং চোখে-মুখে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।

* প্রচুর বিশুদ্ধ পানি এবং ফলের রস পান করানো উচিত।

* যদি উন্নতি না হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

এই তাপ প্রবাহে হিটস্ট্রোক যে কারোরই হতে পারে। তাই সাবধান থাকুন এবং নিরাপদ থাকুন। সচেতনতাই মুক্তি।