শিশুর ওজন না বাড়লে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করাই স্বাভাবিক। কারণ বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিশুর ওজন না বাড়লে তার সঠিক বৃদ্ধি হয় না। কমে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। রোগ প্রতিরোধ কম থাকা মানে নানা অসুখে ভুগতে থাকা। বেশিরভাগ শিশুর প্রতি মা-বাবার এই অভিযোগ করতে দেখা যায় যে, তারা ঠিকভাবে খেতে চায় না। যে কারণে ওজনও বাড়ে না ঠিকভাবে।

শিশুর রুচি বড়দের মতো হয় না। তারা কেবল মুখরোচক খাবার খেতেই পছন্দ করে। পুষ্টির বাছ-বিচার তারা করতে পারে না বা বোঝে না। যে শিশুর ওজন কম সে খুব একটা খেতেও চায় না। খেলেও ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, আইসক্রিম এসব পছন্দ করে। কিন্তু এসব খাবারে যে কোনোরকম পুষ্টি মেলে না সেকথা তো সবারই জানা। শিশুর ওজন বাড়ানোর জন্য সঠিক পুষ্টি পৌঁছে দেয়া জরুরি। শিশুর ওজন বাড়নোর জন্য তাকে খেতে দিতে হবে পুষ্টিকর কিছু খাবার-

পাতে থাকুক ডিম

ডিম পুষ্টিকর একটি খাবার। একটি ডিম খেলে শরীরে অনেকরকম পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এতে আছে ভিটামিন ও সব ধরনের প্রোটিন। আরও আছে একাধিক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। তাই শিশুর ওজন বাড়াতে প্রতিদিন ডিম খাওয়ার বিকল্প নেই। তবে ডিম খাওয়াবেন স্বাস্থ্যকর উপায়ে। ভাজা কিংবা মশলাদার নয় বরং সেদ্ধ করে খাওয়াতে পারেন। প্রতিদিন একইভাবে ডিম খেতে পছন্দ না করলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে সুস্বাদু কোনো খাবার তৈরি করে দিতে পারেন।

শিশুকে আলু খেতে দিন

আলুর তৈরি নানা খাবার শিশুরা পছন্দ করে। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে এই সবজি। এতে আছে পর্যাপ্ত আমাইনো অ্যাসিড, ক্যালোরি ও ডায়েটারি ফাইবার। তাই শিশুকে নিয়মিত আলু খাওয়াতে পারেন। একই রেসিপিতে তৈরি না করে ভিন্ন ভিন্ন ও ব্যতিক্রম রেসিপি তৈরি করতে পারেন। এতে শিশু খেতে বেশি পছন্দ করবে। তবে খেয়াল রাখবেন, সেসব রেসিপি যেন স্বাস্থ্যকর হয়।

দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার

বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার হলো দুধ। দুধ ছাড়াও দুধ জাতীয় অনেক খাবার রয়েছে যা শিশুর জন্য উপকারী। শিশুকে নিয়মিত দুধ, চিজ, মাখন ইত্যাদি খেতে দিন। এসব খাবারে থাকে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম। আমাদের হাড়ের গঠনে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিন দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার খেলে শিশুর ওজন বাড়বে।

মাংস খেলেও ওজন বাড়ে

বেশিরভাগ শিশু মাংস খেতে পছন্দ করে। বিশেষ করে মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি নানা খাবার তারা আগ্রহের সঙ্গে খায়। এতে আছে প্রচুর প্রোটিন। এই উপাদান মাসল তৈরিতে সাহায্য করে। তাই শিশুর ওজন বাড়াতে চাইলে তাকে নিয়মিত মুরগির মাংস খেতে দিন। তবে চিকেন ফ্রাই না করে দিতে পারেন চিকেন স্যুপ কিংবা ঝলসানো চিকেনের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার।

পুষ্টিকর পিনাট বাটার

শিশুকে পিনাট বাটার দিলে সে চেটেপুটে খাবে। স্বাস্থ্যকর এই খাবারে আছে ভালো ক্যালোরি। প্রতিদিন তাই শিশুকে পিনাট বাটার খেতে দিন। এতে শিশুর ওজন নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না।

শুকনো ফলের উপকারিতা

শুকনো ফল এমন একটি খাবার, যারা ফল খেতে পছন্দ করে না তারাও এটি খেতে ভালোবাসে। শিশুর ওজন বাড়াতে এই শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটস বেশ কার্যকরী। কারণ এতে থাকে পর্যাপ্ত মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। তাই শিশুকে নিয়মিত নানা রকম ড্রাই ফ্রুটস খেতে দিন।

কলার উপকারিতা

কলা খেলে পাওয়া যায় প্রচুর শক্তি। ওজন বাড়াতেও কলা বেশ কার্যকরী। একটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালোরি থাকে। শিশুকে নিয়মিত কলা খেতে দিন। শুধু ফল খাওয়ার পাশাপাশি শেক বা ডেজার্ট তৈরি করেও খেতে দিতে পারেন। এতে শিশুর ওজন বাড়বে স্বাস্থ্যকর উপায়ে। 

এইচএন/এএ