বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ দম্পতিই কর্মজীবী। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই নিজ নিজ ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। এতে অনেক রকম সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য, প্রয়োজনে সাপোর্ট দেওয়া, কর্মব্যস্ত সময় পার করার কারণে তুচ্ছ বিষয়ে মনোমালিন্য না হওয়া ইত্যাদি। তবে দু’জনেই ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করতে গিয়ে অনেক সময় পারস্পারিক দূরত্ব বেড়ে যেতে পারে। একটি সম্পর্কের সৌন্দর্য হলো দু’জন মানুষ সুখে-দুখে পাশাপাশি থাকায়। ক্যারিয়ার আর ব্যস্ততার কারণে সেই সম্পর্কে দূরত্ব এলে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। এখনকার ব্যস্ত দম্পতিরা সম্পর্ক ভালো রাখতে করতে পারেন এই কাজগুলো-

১. একসঙ্গে কোয়ালিটি টাইম

সব দম্পতির জন্যই কোয়ালিটি টাইম কাটানো জরুরি। কারণ দু’জনের একসঙ্গে কিছু সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি জমা না হলে তা একাকিত্বের কারণ হতে পারে। দিনশেষে ঘরে ফিরে দু’জনে একসঙ্গে কিছু সুন্দর সময় কাটান। সারাদিনের গল্পগুলো ভাগ করে নিতে পারেন। একসঙ্গে রান্নার কাজটি সেরে নিতে পারেন। সপ্তাহান্তে কাছে বা দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে পারেন। শুধু নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন না, একে অপরের কাছের মানুষদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখুন। এতে সবাই মিলে ভালো থাকা সম্ভব হবে।

২. ঈর্ষা নয়, ভালোবাসা

যদি আপনার সঙ্গী তার ক্যারিয়ারে আপনার চেয়ে বেশি সফল হয়, তখন নিজেকে ছোট ভাববেন না বা ঈর্ষা করবেন না। কারণ সেই মানুষটি আপনারই। তার সফলতা মানে আপনারও সফলতা। বরং এটা নিশ্চিত করুন যে তার সফলতার পেছনে আপনার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে, আপনি তার সুসময় ও দুঃসময়ে সমর্থন জুগিয়েছেন।

৩. লিমিটেশন থাকুক

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বলেই কোনো লিমিটেশন থাকবে না, এটি কিন্তু ঠিক নয়। যেকোনো সম্পর্ক সুন্দর রাখার জন্য কিছু বিষয়ে লিমিটেশন থাকা জরুরি। এটি বজায় রাখতে হবে দু’জনের ক্ষেত্রেই। তবে এর সুবিধা নিয়ে কোনো ধরনের লুকোচুরি করবেন না। দু’জনেই স্বচ্ছ থাকুন। কিছু বিষয়ে সীমানা বজায় রাখুন। কেউ কারও সীমানা অতিক্রম করতে যাবেন না।

৪. একসঙ্গে সমস্যার সমাধান করা

পারিবারিক দায়িত্ব এবং ক্যারিয়ারের ভারসাম্য বজায় রাখা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। সেইসঙ্গে চাপ, দ্বন্দ্ব এবং বিরক্তির সৃষ্টি হতে পারে। তাই দু’জনের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ, সময়োপযোগী যৌথ সিদ্ধান্ত এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা জরুরি। পরিবারের দায়িত্ব, সন্তানের যত্ন নেওয়ার ভার শুধুমাত্র একজনের ওপর চাপানোর পরিবর্তে দু’জনেই ভাগ করে নিন। নির্দিষ্ট সমস্যার ওপর ফোকাস করুন এবং সমাধান খুঁজে পেতে একে অপরকে সাহায্য করুন।

৫. প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন

আপনি যদি কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য পরিচালনা করা কঠিন মনে করেন, আপনাদের পারস্পারিক সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হচ্ছে বলে মনে করেন তবে একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। আপনার পরবর্তী করণীয় তিনি সুন্দর করে বলে দিতে পারবেন। একটি সম্পর্ক ভেঙে ফেলা সহজ, সেটি সুন্দরভাবে চালিয়ে যাওয়াটাই চ্যালেঞ্জ। জীবনে সুখী ও সফল হতে হলে এই চ্যালেঞ্জ জয় করেই আসতে হবে।