সাধারণ সর্দি-জ্বর এক প্রকার ভাইরাসজনিত রোগ যা মূলত শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগে হয়ে থাকে। সাধারণত রিনো ভাইরাস নামক এক প্রকার ভাইরাসের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস করোনাভাইরাসের মতো। মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়, তবে এটি কিছুটা দুর্বল প্রকৃতির ভাইরাস। এটি শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগকে আক্রান্ত করলেও ফুসফুসকে আক্রান্ত করে না। তাই এটি অস্বস্তিকর হলেও মারাত্মক নয়।

সর্দি-জ্বরের উপসর্গ কোনগুলো?

* নাক দিয়ে পানি পড়া
* নাক বন্ধ হয়ে আসা
* হালকা গলা ব্যথা
* কাশি
* জ্বর জ্বর অনুভব
* জ্বর ৯৯ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে
* মাথাব্যথা
* হাঁচি
* শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি। 

 

টাইফয়েডের সঙ্গে সর্দি-জ্বরের পার্থক্য

টাইফয়েড জ্বরে সাধারণত সর্দি-কাশি থাকেনা। রিনো ভাইরাসের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি দিয়েই শুরু হয়। টাইফয়েড সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী উচ্চতাপমাত্রাসহ হয়ে থাকে। রিনো ভাইরাস তুলনামূলক কম তাপমাত্রার। টাইফয়েডের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়া হতে পারে। কিন্তু সর্দি-জ্বর হলে ডায়েরিয়া থাকবে না। টাইফয়েডের ক্ষেত্রে শরীরে র‍্যাশ দেখা দেবে, সর্দি-জ্বর হলে র‍্যাশ দেখা দেবে না।
 
করোনাভাইরাসের সঙ্গে রিনো ভাইরাসের পার্থক্য

করোনা ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। তবে রিনো ভাইরাস ফুসফুসকে আক্রান্ত করে না। কিংবা ফুসফুসে মারাত্মক জটিলতা করতে সক্ষম নয়। সর্দি-কাশি দিয়ে জ্বর শুরু হলে বুঝতে হবে ভাইরাল ফিভার এবং আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নাই। করোনা পরীক্ষা করে নিতে হবে দ্রুত।

সর্দি-জ্বরের কারণে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে

সর্দি-জ্বর থেকে অনেক সময় সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়ে থাকে। টনসিলাইটিস, মিডেল ইয়ার ইনফেকশন বা অটাইটিস মিডিয়া হতে পারে। কানে ব্যথা করতে পারে। নিউমোনিয়া হতে পারে, একিউট সাইনুসাইটিস হতে পারে। অ্যাজমা রোগীদের অ্যাজমা অ্যাটাক হতে পারে।
 
সর্দি-জ্বর প্রতিরোধের উপায়

সাধারণত দেখা যায়, এক পরিবারে একজনের সর্দি-জ্বর হলে সবারই হয়ে যায়, তাই প্রতিরোধের জন্য যা করতে হবে তা হচ্ছে, নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহারিত সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে না। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহারিত গ্লাস ও অন্যান্য অনুষঙ্গ ব্যবহার করা যাবে না।


 
সর্দি-জ্বরের চিকিৎসা

দ্রুত করোনা টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে। যদি নেগেটিভ আসে কিংবা করোনার অন্যান্য লক্ষণ না থাকে তবে সর্দি-জ্বরে সাধারণত চিকিৎসার দরকার হয়না। শুধুমাত্র উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসাই যথেষ্ট। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল আর সর্দির জন্য এন্টিহিস্টামিন ইত্যাদি দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগী ৭-২১ দিনের মধ্যে মোটামুটি সুস্থ হয়ে যায়।
 
সর্দি-জ্বরে সাবধানতা

ভাইরাল ফিভার ভালো হওয়ার পর অনেকের ক্ষেত্রে দুটি এলার্মিং উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন-
১। পোস্ট ভাইরাল ড্রাই কফ (শুকনো কাশি)
২। পোস্ট ভাইরাল হেডেক (মাথাব্যথা)
প্রয়োজনে এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। 
 
এইচএন/এএ