করোনা মহামারির ভয়াবহতায় এক বছরের বেশি সময় আমরা ঘরবন্দী অবস্থায় রয়েছি। এতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে শিশুদের আচরণে। অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে শিশুদের আচরণ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও অনেক অভিভাবক এ বিষয়ে একেবারেই উদাসীন। যে লক্ষণ দেখে শিশুর আচরণ পরিবর্তন বোঝা যায় সেগুলো আজ আপনাকে জানাবো-

খাবার খেতে অনীহা

শিশুর আচরণ পরিবর্তনের আরেকটি বড় প্রবণতা হলো শিশু খাবার খেতে চায় না। লকডাউনে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় শিশু এমন আচরণ করতে পারে। বেশিরভাগ অভিভাবক জোর করে খাওয়াতে চান। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেন, শিশু খেতে না চাইলে জোর করে খাওয়ানো ঠিক না। 

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যাওয়া

চলমান লকডাউনে শিশুর আচরণ পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। শিশুর আচরণেও এর প্রভাব পড়ে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে হবে। নিয়মিত সবজি ও ফল খেলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। 

সামান্য কথায় খিটখিটে মেজাজ

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে ছোটখাটো ব্যাপারে অনেক শিশু রেগে যাচ্ছে। যেকোনো কথায় উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকে সামান্য বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে কিংবা কেঁদে ফেলে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামান্য কথায় শিশুর খিটখিটে মেজাজ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। শিশুর আচরণ পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ এটি। 

দিনে ঘুমানো

করোনা পরিস্থিতিতে শিশুর দিনে ঘুমানোর প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। এটি শিশুর আচরণেও প্রভাব ফেলছে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শিশুরা দিনের বেলায় ঘুমাতে চাইছে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউনের কারণে বেশিরভাগ শিশুর মধ্যেই এ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কখনো কখনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে শিশু দিনে ঘুমায়। 

মনোযোগের অভাব

অনলাইনে পড়াশুনার ক্ষেত্রে অনেক শিশুই মনোযোগ দিতে পারে না। সেগুলো তাদের আচরণে প্রকাশ পায়। অনেক সামান্য কথায় খিটখিটে মেজাজ অথবা শব্দ করে কান্না করতে থাকে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন পরিস্থিতিতে শিশুর কেন মনোযোগের অভাব রয়েছে অভিভাবকদের সেটি বের করতে হবে এবং কাউন্সেলিংয়ে নিতে হবে। 

যেভাবে সহায়তা করবেন-

১. শিশুর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখলে তাকে ভালোভাবে বোঝান।

২. তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখুন। তার সব কথা শুনুন।

৩. তাকে কথা বলার সুযোগ দিন।

৪. তাদের ব্যায়ামের অভ্যাস তৈরি করুন।

৫. পরিমিত খাবার খেতে দিন।

এইচএকে/আরআর/এএ