প্রতিদিনের রান্না-খাওয়ার কাজ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে ফ্রিজ। ফ্রিজ থাকাতে অনেক খাবার অপচয় থেকে বেঁচে যাচ্ছে, সংরক্ষণ করা হয়েছে সহজ। প্রিয়জনের অনুপস্থিতিতে তার প্রিয় খাবারটি রাঁধলেও মন খারাপ করে থাকতে হয় না, কারণ সহজেই তার জন্য রেখে দিতে পারছেন ফ্রিজে। বারবার বাজার করার ঝামেলা নেই, খাবার নষ্ট হওয়া ভয় নেই। বাঁচে সময় ও খরচ। 

ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করাই হয় তা ভালো রাখার জন্য। কিন্তু অনেক সময় ফ্রিজে রাখা খাবার বের করে গরম করার সময় দেখা যায় তা খারাপ হয়ে গেছে। এর কারণ হলো, আপনি সঠিক নিয়ম মেনে খাবার সংরক্ষণ করেননি। ভাবছেন ফ্রিজে খাবার রাখার আবার নিয়ম কী! ফ্রিজে খাবার রাখারও আছে কিছু নিয়ম। 

অনেকে ফ্রিজে খাবার রেখে সেকথা বেমালুম ভুলে যান। অর্থাৎ মাসের পর মাস সেসব খাবার পড়ে থাকে ফ্রিজে। কিন্তু কোন খাবার কতদিন রাখা যাবে সে বিষয়ে আগে জেনে নেওয়া জরুরি। এমন কিছু জীবাণু রয়েছে যেগুলো কেবল ঠান্ডায় জন্মায়। তাই ডিপফ্রিজে খাবার রাখা মানেই নিরাপদ নয়। খাবার স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে ফ্রিজে খাবার রাখার আগে জেনে নিন কিছু নিয়ম-

অনেকে রান্না করা ও কাঁচা খাবার একইসঙ্গে ফ্রিজে রেখে দেন। কাঁচা এবং রান্না করা খাবার সংরক্ষণের পদ্ধতি এক নয়। দুই ধরণের খাবার ফ্রিজে আলাদা আলাদা সংরক্ষণ করতে হবে। ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণের সময় এই দিকে খেয়াল করুন। 

একসঙ্গে অনেকগুলো খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করবেন না। এতে করে প্রয়োজনীয় অংশের খাবারটুকু বের করতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার ছোট ছোট ভাগ বক্সে করে রাখুন। এতে যখন যেটুকু দরকার, বের করে গরম করে খেতে পারবেন। 

খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ফ্রিজের তাপমাত্রার দিকে নজর রাখা জরুরি। বর্ষা কিংবা শীতের সময়ে যে তাপমাত্রার দরকার হয়, গরমে তার চেয়ে বেশি দরকার হতে পারে। তাই আবহাওয়ার ধরন বুঝে বা প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে দেবেন। 

ফ্রিজে খাবার রাখার ক্ষেত্রে বক্স ব্যবহার করলে সেটি একেবারে ঠেসে ভরবেন না। মাঝখানের কিছুটা অংশ ফাঁকা রাখুন। এতে ভেতরে বাতাস চলাচল সহজ হবে। অনেকে ফ্রিজের দরজায় আদা, লেবু ইত্যাদি রেখে দেন। এমনটা করা যাবে না। ফ্রিজের দরজায় রাখুন সস, ভিনেগার ইত্যাদি।

অনেকে ফ্রিজে মাখন, চিজ ইত্যাদি রাখার সময় কোনো ধরনের বক্স ব্যবহার করেন না। বরং শুধু প্যাকেটে করেই রেখে দেন। এভাবে রাখা ঠিক নয়। বেশিদিন ভালো রাখার জন্য কোনো এয়ারটাইট বক্সে চিজ, মাখন ইত্যাদি সংরক্ষণ করুন। 

ফ্রিজে ডিম রাখার ক্ষেত্রে ট্রে ব্যবহার না করে বক্সে রাখুন। এতে ডিম ভালো থাকবে। মাছ-মাংসের তাজা স্বাদ ধরে রাখার জন্য তা ভালোভাবে ধুয়ে লবণ, গোল মরিচের গুঁড়া ও লেবুর রস মাখিয়ে এয়ার টাইট বক্সে রাখুন। যখনই রান্না করুন না কেন, স্বাদ অটুট থাকবে। 

মৌসুমী ফল মৌসুমের পরেও খাওয়ার জন্য অনেকে দীর্ঘদিন ডিপফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে তারপর রাখতে হবে। কারণ বেশিদিন এসব ফল ফ্রিজে রাখলে তার স্বাদ ও পুষ্টি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। 

ফ্রিজে খাবার খোলামেলা ফেলে রাখবেন না। খেয়াল রাখবেন, ফ্রিজে যেন ঢাকনা ছাড়া কোনো খাবার রাখা না হয়। কারণ এতে নষ্ট হয়ে যায় খাবারের গুণগত মান। যা শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়। সুস্থ থাকতে তাই ফ্রিজে খাবার রাখার ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে।

এইচএন/এএ