চুল পাকা অস্বাভাবিক নয়। বরং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চুল পাকা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন যে সমস্যা অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় তা হলো, কম বয়সে চুল পেকে যাওয়া। অল্প বয়সে চুল পাকার কারণে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যা নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন তারা। অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে তা পুরোপুরো না হলেও অনেকটাই দূর করা সম্ভব।

চুল পাকার কারণ

মাথার ত্বকে পর্যাপ্ত ভিটামিনের অভাব, হরমোনের বা পরিবেশগত সমস্যা কম বয়সে চুল পাকার জন্য দায়ী।

অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও কম ঘুম, অস্বাস্থ্যকর ও বেশি চিনিযুক্ত খাবার ইত্যাদির কারণেও চুল পাকে।

অল্প বয়সে চুল পাকার পেছনে বংশগত কারণ থাকতে পারে।

চুলে নানা কৃত্রিম রং ব্যবহারের ফলেও চুল পাকতে পারে।

ধূমপান শুধু ফুসফুসেরই ক্ষতি করে না, অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে কম বয়সে চুল পাকার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মানসিক চাপেও কি চুল পাকে?

আমাদের মাথার ত্বকে পর্যাপ্ত ভিটামিন, মিনারেল বা খনিজ না পৌঁছালে অকালে চুল পেকে যেতে পারে। হরমোন বা পরিবেশগত কারণ এর জন্য দায়ী হতে পারে। তবে অকালে চুল পাকার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় উচ্চ মানসিক চাপকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে মেলানোসাইট স্টেম সেল সম্পর্কিত, যেটি মেলানিন উৎপাদন করে। মেলানিনের মাত্রার হেরফেরের কারণে চুল ও গায়ের রঙে তারতম্য হয়।

চুল পাকা প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়

চুল পাকা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে পেঁয়াজ। পেঁয়াজ বেটে নিয়ে মাথার ত্বকে ও চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। মিনিট ত্রিশেক রেখে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে পাকা চুল কালো হতে শুরু করবে দ্রুতই।

চুল পাকা প্রতিরোধে ব্যবহার করতে পারেন আমলকী। লেবুর রসের সঙ্গে আমলকীর গুঁড়া মিশিয়ে মাথার ত্বকে ব্যবহার করুন। এরপর ঘণ্টাখানেক রেখে দিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
 
অল্প বয়সে চুল পাকলে মেহেদি ব্যবহার করতে পারেন। চুলে প্রাকৃতিক রং এনে দিতে পারে এটি। তবে শুধু মেহেদি নয়, এর সঙ্গে কফি পাউডার, সামান্য দই ও লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্যাল্প ও চুলে ব্যবহার করুন। এভাবে দুই-তিন ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেললে উপকার পাবেন।

নারিকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলেও চুল পাকার সমস্যা প্রতিরোধ করা যাবে। তিন চা চামচ নারিকেল তেল ও দুই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুন। এমনটা প্রতিদিন করলে উপকার পাবেন।

চুল পাকা প্রতিরোধে কী খাবেন?

সবুজ সবজিতে আছে প্রচুর ফলিক এসিড। এটি চুল তো ভালো রাখেই, অকালে চুল পেকে যাওয়াও রোধ করে। 

চুল পাকা কমাতে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় মাছ রাখুন। মাছে আছে পর্যাপ্ত ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। এটি চুল পাকা দূর করতে সাহায্য করে।

অকালে চুল পাকা বন্ধ করতে খাবারের তালিকায় রাখুন বাদাম। যেকোনো ধরনের বাদামেই প্রচুর কপার থাকে। যা চুলের অকালে পেকে যাওয়া বন্ধ করে।  

নিয়মিত মুরগির মাংস খেলেও চুল পাকার সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। কারণ মাংসে রয়েছে ভিটামিন বি-১২ এবং ফলিক এসিড। এগুলো চুল পাকা ঠেকাতে কাজ করে।

চুলের অকালে পেকে যাওয়া ঠেকাতে খেতে পারেন কলিজা। নিয়মিত কলিজা খেলে চুল পাকার সমস্যা কমবে অনেকটাই। কলিজায় রয়েছে ভিটামিন বি-১২।

এইচএন