সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য এর যত্ন নেওয়া জরুরি। কেবল ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হলেই নয়, বরং সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকলেও তাকে সুন্দর রাখার চেষ্টা করতে হবে। অযত্নে ফেলে রাখলে যেকোনো সুন্দর জিনিসই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মনোবিদদের পরামর্শ হলো, শরীরের যত্ন নেওয়ার মতো করেই যত্ন নিতে হবে সম্পর্কেরও। এতে কিন্তু বাড়তি খরচের দরকার পড়বে না, বরং পরস্পরের প্রতি আন্তরিকতা ও ভালোবাসা থাকলেই যথেষ্ট। করণীয়গুলো আরেকবার জেনে নিন-

যোগাযোগ রাখুন

এই যোগাযোগ মানে ফোনে কথা বলা কিংবা চিঠি লেখা নয়, একে অন্যের মনের খোঁজ রাখা। অনেক সময় একই ঘরে থেকেও দুজন দুজনের মনের খবর রাখেন না। তাই পরস্পরকে সময় দিন। প্রতিদিন সময় করে কথা বলুন। একসঙ্গে সময় কাটান। সারাদিনের অভিজ্ঞগুলো, সংসারের টুকিটাকি আলোচনা করুন। নিজেদের মধ্যে কখনো তৃতীয় ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেবেন না। পরস্পরের কথা মন দিয়ে শুনুন। সমর্থন করুন। কাজের কারণে বাইরে থাকলে ফোন করে তার খোঁজ নিন, কাজের ফাঁকে ছোট্ট একটি মেসেজ লিখে পাঠান। আপনাদের এমন ছোট ছোট কাজই সম্পর্ক আরও সুন্দর করে তুলবে।

পরস্পরকে গুরুত্ব দিন

দাম্পত্য সম্পর্ক সুন্দর রাখার জন্য পরস্পরকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। অনেক সময় মনে হতে পারে, সে তো রয়েছেই! কিন্তু এই ধারণা ভুল। এতে পরস্পরের প্রতি সম্মান কমতে শুরু করে। দুজন দুজনকে বিশেষ গুরুত্ব দিন। তাকে যত্নে রাখুন। তার পছন্দ-অপছন্দ মাথায় রাখুন। তার জন্য নিজেকে পরিপাটি রাখুন। মাঝেমাঝে উপহার দিন। এতে দুজনেরই মন প্রফুল্ল থাকবে। পরস্পরের মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা করুন। ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি করে নিন। এতে দুজনের মধ্যকার বোঝাপড়া আরও সুন্দর হবে। অবসর সময়টুকু একসঙ্গে কাটান। 

স্পেস দিন

দুজন মানুষ যতই কাছের হোক না কেন, একান্ত নিজের বলেও কিছু সময় থাকা দরকার। আপনার সঙ্গীর সেই সময়টুকু যেন থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। দম্পতি বলেই যে পরস্পরের সবকিছু জানতে হবে, সব বিষয়ে মত দিতে হবে এমন কিন্তু নয়। তাই পরস্পরকে স্পেস দিন। বন্ধু কিংবা আত্মীয়দের সঙ্গেও সময় কাটান। আপনার সঙ্গীও যেন সেই সুযোগ পায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

সৎ থাকুন

পরস্পরের প্রতি সৎ থাকুন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কোনো গোপনীয়তা না রাখাই ভালো। ছোটখাটো কেনাকাটা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা বেড়াতে যাওয়ার মতো সাধারণ বিষয় লুকানোর প্রয়োজন নেই। সেইসঙ্গে সঙ্গীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করাটাও কোনো কাজের কথা নয়। অধিকারের মাত্রা যেন অতিক্রম না করে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। তবে এমনকিছু যদি থাকে, যা সম্পর্ককে ভাঙনের দিকে নিয়ে যেতে পারে, সম্পর্ক ভালো রাখার খাতিরে তা এড়িয়ে যাওয়াই যায়। 

ক্ষমা করুন

অতীতের কোনো ভুলের কথা মনে করে মন খারাপ হতেই পারে। তবে তাই নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে খিটিমিটি বা ঘ্যানঘ্যান করতে যাবেন না। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অতীতের স্মৃতি মুছে ফেলুন। অতীতের কোনো ভুলের জন্য তাকে খোটা দেবেন না। আপনার সঙ্গী যদি অনুতপ্ত থাকেন, তবে তাকে ক্ষমা করে দিন। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইলে ক্ষমা করতে জানাটাও জরুরি। তবে একই ধরনের ভুলে বারবার ক্ষমা করবেন না। এতে সে সুযোগ পেয়ে যাবে।

এইচএন/এএ