নারীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো তার মাতৃত্বের সময়টা। মা হওয়াটা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি খুশির এবং অনেক বড় দায়িত্বের। কারণ একদম শুরু থেকেই নিজের ও অনাগত সন্তানের জন্য সচেতন হতে হয়, নিতে হয় সঠিক যত্ন।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো কখন দেখা দেয়?

সাধারণত পিরিয়ড মিস করাকে গর্ভাবস্থার লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। তবে এর বাইরেও আরও কিছু লক্ষণ আছে যা পিরিয়ড মিস করার আগে বা গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে লক্ষ করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ঘন ঘন প্রস্রাব

গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে। তার মধ্যে একটি হলো রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি। এর ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসতে পারে। এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মধ্যে। এমন চলতে থাকে কিছুদিন ধরে। গর্ভস্থ শিশু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বাড়তে পারে।

ক্ষুধামন্দা

এসময় খাবার খেতে ইচ্ছে করবে না একদমই। নির্দিষ্ট কোনো কোনো খাবার খেলে বা গন্ধ শুঁকলে বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে। অবশ্য এসময় এসব সমস্যার নির্দিষ্ট ব্যাখ্য নেই। তবে হতে পারে  শরীরে ক্রমবর্ধমান ইস্ট্রোজেন হরমোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এমনটি ঘটে থাকে। পছন্দের অনেক খাবার এসময় বিস্বাদ মনে হতে পারে। 

পেট ফুলে যাওয়া

গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে হতে পারে এটি। এসময় হবু মায়ের পেট ফুলে যাওয়ার মতো অনুভূতি হতে পারে। এই অনুভূতি অনেকটা পিরিয়ড শুরুর আগের অনুভূতির সঙ্গে মিলে যায়। এসময় পেট ফোলার কারণে পরিধেয় পোশাক অনেকটা ফিট মনে হতে পারে। যদিও এত আগেভাগে জড়ায়ুতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসে না।

অবসন্নতা

এসময় আপনি প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। এই ক্লান্তিবোধেরও এখন পর্যন্ত সঠিক কোনো ব্যাখ্যা নেই। প্রোজেস্ট্রেরন হরমোনের ক্রমবর্ধমান প্রবাহের কারণে এমনটা হতে পারে। বারবার প্রস্রাব এবং মর্নিং সিকনেসের কারণে আপনি ক্লান্ত অনুভব করতে পারেন। তবে এই সমস্যা প্রথম তিনমাসের মধ্যেই কেটে যায়। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে আবার এই ক্লান্তি ফিরে আসতে পারে।

স্পটিং ও সাদা স্রাব

নিষিক্ত ডিম্বানু জরায়ুর দেয়ালে যখন আটকে যায়, তখন স্পটিং বা হালকা রক্তপাত ও পিরিয়ডের মতো ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এটি গর্ভাবস্থার একেবারেই প্রাথমিক লক্ষণ। এটি হতে পারে গর্ভধারণের ৬ থেকে ১২ দিনের মধ্যে। পিরিয়ডের ব্যথার সঙ্গে মিল থাকার কারণে অনেকে এটিকে পিরিয়ড শুরু হয়েছে বলে ভুল করেন। এছাড়া এসময় সাদা স্রাবও দেখা দিতে পারে। 

শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া

এসময় শরীরের তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। আপনি যদি আপনার শরীরের তাপমাত্রা প্রতিদিন রেকর্ড করেন তবে খেয়াল করুন তা একটানা ১৮ দিনের বেশি স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে বেশি রয়েছে কি না। যদি এমনটা হয় তবে হতে পারে তা আপনার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ।