সারা বছর পাওয়া যায় এমন ফলের তালিকা করলে সবার আগেই আসবে কলার নাম। ডিম কিংবা দুধের মতো এটিও আমাদের অতি পরিচিত খাবার। সেইসঙ্গে এটি বেশ পুষ্টিকরও। ভিটামিন এ, বি, সি এবং ই সহ পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন ইত্যাদির মতো খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ কলা শক্তির বেশ ভালো উৎস। এই ফলের আরও কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

গবেষণা অনুযায়ী, এই ফলের পটাশিয়াম রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং এটি এর মাত্রা কমাতেও সাহায্য করতে পারে। তাই যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কলা রাখতে পারেন খাবারের তালিকায়। নিয়মিত কলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে সহজেই।

মস্তিষ্কের শক্তি উন্নত করে

ভিটামিন বি এর একটি ভালো উৎস হলো কলা। এটি স্নায়ুর কার্যক্ষমতা এবং শেখার ক্ষমতা বাড়ায়। তাই বড়দের পাশাপাশি শিশুকেও প্রতিদিন কলা খেতে দেওয়া উচিত। এতে তারা যেকোনো বিষয় খুব সহজেই মনে রাখতে পারবে, ধারালো হবে স্মৃতিশক্তি।

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়

প্রতি বছর স্ট্রোকের কারণে বিশ্বে বহু মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। একটু সচেতন হলেই এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। স্ট্রোক থেকে বাঁচতে খাবার এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা জরুরি। এক্ষেত্রে খাবারের তালিকায় যোগ করুন কলা। গবেষণা বলছে, প্রতিদিন একটি কলা খেলে তা স্ট্রোকের মতো দুর্ঘটনা কমাতে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ তাই কলা খেলে কমে ক্যান্সারের ঝুঁকিও।

হাড় ভালো রাখে

একটু বয়স বাড়লেই হাড়ের নানা সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় অনেককে। এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে কলা। কলায় উপস্থিত প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ করে। ফলে এটি উন্নত হাড় গঠনে সাহায্য করে। তাই হাড়ের সমস্যা এড়াতে নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত।

হজমশক্তি বাড়ায়

কলায় থাকা প্রাইওবটিকস এনজাইম তৈরিতে সাহায্য করে যা পুষ্টির শোষণকে সক্ষম করে, এভাবে হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে। কাঁচা কলা ডায়রিয়ার চিকিৎসায়ও কার্যকর। হজমক্ষমতা শক্তিশালী করতে তাই নিয়মিত কলা রাখুন পাতে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

কলায় থাকে পেকটিন যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে। যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের প্রতিদিন পাকা কলা খাওয়া জরুরি। এতে থাকা ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখবে। 

কখন কলা খাওয়া বেশি উপকারী?

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সকালে নাস্তায় কলা রাখার। সকালে শরীরচর্চার পর একটি কলা খেলে নিলে দ্রুত শক্তি ফিরে আসে। সকালে টোস্ট কিংবা ডিমের সঙ্গে কলা খেলে তা পুষ্টি যোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। কলা সব সময় হেলদি ফ্যাটের সঙ্গে খাওয়া ভালো। হতে পারে তা পিনাট বাটার, ইয়োগার্ট কিংবা পরিজ। তবে ভারী খাবারের সঙ্গে কলা না খাওয়াই ভালো।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।