একটি সম্পর্ক অসুস্থ হয়ে গেলে সেই সম্পর্ক খুব বেশিদূর টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না। কারণ সেখানে ইতিবাচক বিষয়ের চেয়ে নেতিবাচক বিষয় থাকে বেশি। যে কোনো কিছুতে অসম্মত হওয়ার প্রবণতাকে টক্সিক পারসোনালিটি বলে। টক্সিক পারসোনালিটির মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। আর সে যদি হয় রোমান্টিক সঙ্গী তাহলে প্রেমের সম্পর্ক বিষিয়ে যায়। টক্সিক পারসোনালিটির মানুষকে কীভাবে এড়িয়ে চলা যায় তাই উপস্থাপন করবো।

অসুস্থ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসুন

প্রেমের সম্পর্কে টক্সিক মানুষের আগমন ঘটলে সেই সম্পর্ক চালনা না করাই উত্তম। কারণ টক্সিক মানসিকতা সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়ে। আর নিজের মধ্যে টক্সিক মানসিকতা আনতে না চাইলে টক্সিক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছেড়ে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। টক্সিক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করার ক্ষেত্রে যেসব কাজ করা উচিত: 

ক. উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করুন

সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য হুটহাট সিদ্ধান্ত নেবেন না। কিছু সময় নিন। অপর মানুষকে বুঝুন। তারপর তাকে ভালোভাবে বোঝানোর পর সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। 

খ. যা বলবেন তা আয়ত্ত্ব করে নিন

আগে থেকে মানুষটিকে যা বলবেন তা আয়ত্ত্ব করে নিন। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাহায্য করবে।

গ. তাকে ভালোভাবে বুঝুন

যার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে তার কাছ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাকে বোঝা দরকার। তার মানসিকতা সম্পর্কে চিন্তা করুন এবং তার মানসিকতার অনুপাতে তার সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছান।

ঘ. ভালো একটি জায়গা নির্বাচন করুন

তাকে এমন কোনো জায়গায় ডাকুন যেখানে বসে খোলাখুলি কথা বলা সম্ভব। তারপর তার সঙ্গে কথা বলুন। তাকে বোঝান যে আপনি আর তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না।

ঙ. স্পষ্টভাষী হন

বক্তব্যে স্পষ্ট হলে অনেক সমস্যার সুন্দর সমাধান করা সম্ভব। তাই স্পষ্টভাষী হওয়ার বিকল্প নেই। যার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিন আপনি আর তার সঙ্গে থাকতে চাইছেন না।

আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন

সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সময় চেষ্টা করুন যেন সেই মানুষ কষ্ট না পায়। কারণ আপনার অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে সেই মানুষ অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিতে পারে। তাই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা বুদ্ধিমানের কাজ। যেসব উপায় অবলম্বন করে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা হলো:

ক. সীমার মধ্যে থাকুন

নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে নিন। সীমার মধ্যে থাকলে অপর মানুষ কষ্ট পাবেন না। যার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না তাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলুন যে কেন আপনি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না। এতে সে নিজেকে সংশোধনের অবকাশ পাবে।

খ. যোগাযোগ বন্ধ করে দিন

তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিন। এর মাধ্যমে আপনি তাকে ভুলে থাকতে সমর্থ হবেন। 

গ. কৌশলী ভূমিকা পালন করুন

কৌশলের আশ্রয় সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই টক্সিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে কৌশলী ভূমিকা রাখতে পারেন।

ঘ. সহায়তার মানসিকতা রাখুন

আপনার ভুলের কারণে অপর মানুষটি অনভিপ্রেত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারে। যাতে সে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে সেজন্য তার প্রতি সহায়তার মানসিকতা রাখুন। 

মানসিকভাবে কষ্ট দেবেন না

টক্সিক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখাই ভালো। কিন্তু সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে তাকে দুই একটি খারাপ কথা শুনিয়ে দেয়া ঠিক নয়। কারণ আপনি যাকে মানসিকভাবে কষ্ট দিচ্ছেন সে আপনার এই আচরণ অনেক দিন মনে রাখবে। আর মানুষ হিসেবে টক্সিক হওয়ার কারণে আপনার সম্পর্কে সারা জীবন সে খারাপ ধারণা পুষে রাখবে মনের ভেতর। তাই টক্সিক মানুষকে মানসিকভাবে কষ্ট না দিয়ে কীভাবে তার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসবেন তা জেনে নিন:

ক. আলোচনা করুন

আলোচনার মাধ্যমে অনেক ভালো সিদ্ধান্তে আসা যায়। তাই মানসিকভাবে কষ্ট না দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করা উচিত। 

খ. ইতিবাচক সমঝোতায় আসুন

আলোচনায় ইতিবাচক অবস্থানে থাকুন। এতে আপনি যার কাছ থেকে চলে আসতে চাইছেন সেও আপনার প্রতি ইতিবাচক অবস্থানে থাকবে।

গ. তার প্রতি যত্নবান হন

যার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসবেন তার প্রতি যত্নবান হওয়া একান্ত জরুরি। যদি সেই মানুষ তার নিজের জন্য ক্ষতিকর কোনো কিছু করে ফেলে তাহলে তার প্রতি যত্নবান হন। 

ঘ. প্রয়োজনে মানসিক চিকিৎসকের কাছে যান

প্রয়োজনে মানসিক চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এর মাধ্যমে সেই মানুষের উপকার হবে। 

এইচএকে/এইচএন/এএ