শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন? কাঁচকলা আবার কীভাবে ওজন কমায়! কিন্তু মজার ব্যাপার হলো ২০০৮ সালের দিকে জাপানে এই ডায়েট জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সেই জনপ্রিয়তা ক্রেজে রূপ নিয়েছিলো। সে সময় জাপানে কলার সংকট দেখা দেয় এবং জাপান সরকার কলা আমদানি করতে বাধ্য হয়!

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা বেশিদিন খাবারের কোনো রুটিন বা ব্যায়াম হুবহু মেনে চলতে পারি না, কারণ সেসব আমাদের কঠিন নিয়মের মধ্যে বেঁধে ফেলে। তাই যে রুটিনের মধ্যে খুব বেশি নিয়মের বাড়াবাড়ি নেই, সেটি মেনে চলতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। জাপানিজদের তৈরি ব্যানানা ডায়েট তেমনই একটি ডায়েট প্ল্যান।

ব্যানানা ডায়েট খুব কঠিন নয়, আবার খুব সহজও নয়। এটি মেনে চলতে আপনাকে মোটামুটি একটি নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আর তাই তো এই ডায়েট প্ল্যানের এত জনপ্রিয়তা। সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো, এটি জাপানিজদের আবিষ্কার হলেও পৃথিবীর যেকোনো খাদ্যাভ্যাসের মানুষই এর সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারবেন।

এই ডায়েটে কোনো অপরিচিত ফল কিংবা মাংস খাওয়ার পরামর্শ নেই। এটি আমিষাশী ও নিরামিষাশী, দুই ধরনের মানুষই মেনে চলতে পারবেন। এই ডায়েট প্ল্যান মেনে চললে আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী করতে হবে-

সকালে যা করবেন

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর একগ্লাস পরিষ্কার পানি খেয়ে নেবেন। এরপর একগ্লাস গরম পানিতে সামান্য লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খাবেন। এরপর দাঁত ব্রাশ করে সকালের নাস্তার পর্ব। এসময় একটি কলা খেতে হবে। না, পাকা কলা নয়, কাঁচকলা। এটি সেদ্ধ করে বা অন্য কোনোভাবে খাওয়া যাবে না। সরসারি কাঁচাই খেতে হবে। একটির বদলে দুটিও খেতে পারেন। তবে এর বেশি খাবেন না। ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন। এটি ঠিক যে কাঁচকলা চিবিয়ে খাওয়া কিছুটা কষ্টকর তবে ভালোভাবে না চিবিয়ে খেলে হজম ভালোভাবে হবে না। 

দুপুর ও রাতেও কি কাঁচকলা

রাতে ও দুপুরে স্বাভাবিক যা খেতেন তাই খেতে পারবেন। তবে ভাজাভুজি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলবেন। তবে আগের অভ্যাসে খাবারের পরে মিষ্টি খেতে যাবেন না যেন। আটটার আগেই শেষ করতে হবে রাতের খাবার। বিকেলের নাস্তা ও রাতের খাবারের ভেতর অন্তত চার ঘণ্টার একটি বিরতি রাখবেন। এই ডায়েট মেনে চলা শুরু করলে রাতের খাবারের পর আবার ক্ষুধা পেতে পারে। সেসময় মৌসুমী যেকোনো একটি ফল খেতে পারেন। তবে সেটি অভ্যাস করে ফেলবেন না। 

বিকেলে কী খাবেন?

বিকেলে একদমই ভারী কিছু খাবেন না। চেষ্টা করবেন বেলা এক-দেড়টার মধ্যে দুপুরের খাবার খেয়ে নেওয়ার। এরপর তিন-চারটার দিকে সামান্য কিছু খেয়ে নেবেন। কী খাবেন? হতে পারে তা ছোলা সেদ্ধ বা বাড়িতে তৈরি পপকর্ন বা ছোট একবাটি ছানা। বেশি সময় ধরে পেট খালি রাখাটাও ঠিক নয়। অল্প করে বারবার খেলে উপকার বেশি পাবেন।

পানি খাবেন পেট ভরে

আপনি যখন এই ডায়েট প্ল্যান মেনে চলবেন তখন দিনে অন্তত চার লিটার পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীরে ওয়াটার রিটেনশন হওয়ার ভয় কমবে, ফলে ওজন কমবে সহজেই। খুব বেশি ঠান্ডা বা গরম পানি খাবেন না। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি খাবেন। পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো করবেন না, ধীরে-সুস্থে খাবেন। অ্যালকোহল পান করবেন না।

শরীরচর্চা না করলেও চলবে

কাঁচকলার এই ডায়েট এত জনপ্রিয় হওয়ার বড় কারণ হলো এতে অন্যান্য ডায়েটের মতো শরীরচর্চা করতেই হবে তা বলা হয়নি। এই ডায়েট মেনে চললে আপনি প্রতিদিনকার শরীরচর্চা করতে পারেন, তবে না করলেও সমস্যা নেই। 

পপক্সো অবলম্বনে