ওজন কমানোর জন্য নানা ধরনের ডায়েট মেনে চলা, নানা শারীরিক কসরত বা শরীরচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন? প্রিয় খাবারগুলো বাদ দিয়ে ওজন কমানোর চ্যালেঞ্জ নিতে কারও ভালোলাগার কথা নয়। বিভিন্ন সবজির রস, বাদামি চাল, বাদামি চিনি খাবারের তালিকায় যোগ করলে তা আপনাকে আরও স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু যখন স্বাদের প্রসঙ্গ আসে, তখন এগুলো পিছিয়ে পড়বেই। 

সব ঠিকঠাকভাবে মেনে চলে ওজন কমানো মোটেও সহজ কিছু নয়। বিস্বাদ খাবার আপনার কতদিন খেতে আর ভালোলাগতে পারে! এমন একটি পরিচিত খাবার রয়েছে যার সম্পর্কে আপনার খুব বেশি ধারণা নেই। বলছি ইসুবগুলের কথা। ইসুবগুল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, একথা তো জানা আছে। কিন্তু এটি যে ওজন কমাতে কতটা সহায়ক, তা নিশ্চয়ই জানেন না! 

ইসুবগুল নামে পরিচিত এই খাবার একটি দ্রবণীয় ফাইবার যা প্লান্টাগো ওভাটার গাছের বীজের ভুসি থেকে পাওয়া যায়। এটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত রেচক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সাহায্য করে। এছাড়া এটি অগ্ন্যাশয়, হার্ট এবং অন্ত্রের জন্যও উপকারী। ইসুবগুল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুসি দানা, পাউডার বা ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়। সারা বিশ্বের মানুষ এটি একটি খাদ্যতালিকাগত পরিপূরক হিসাবে ব্যবহার করে।

দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে

ইসুবগুল পানি শোষণ করে ঘন দ্রবণে পরিণত হয়। যা হজম প্রতিরোধে সহায়তা করে। এভাবে এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ট্রাই-গ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি অদ্রবণীয় এবং দ্রবণীয় উভয় ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা এটিকে খাওয়ার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর উপায় করে তোলে। কারণ ফাইবার মসৃণ অন্ত্রের চলাচল সক্ষম করে এবং পানি শোষণ করে। এটি আমাদের পেটে একটি স্তর স্থাপন করে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরিয়ে রাখে।

পেট পরিষ্কার করে

ইসুবগুল পেট পরিষ্কার করে। পেট পরিষ্কার মানে হলো ভালো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল স্বাস্থ্য। ইসুবগুল সহনশীলতা বাড়ায় এবং শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। এটি স্ট্যামিনা বাড়িয়ে দেয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ওজন কমাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।

কম ক্যালোরি

যেহেতু ইসুবগুলে কম ক্যালোরি রয়েছে, তাই এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওজন কমানোর জন্য একটি স্বাস্থ্যকর উপায়। ইসুবগুল খেলে বাড়তি ক্যালোরি জমে যাওয়ার ভয় থাকে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।

ক্ষুধা কমায়

আপনি যদি ইসুবগুলের ভুসি পানিতে ভিজিয়ে খান তবে তা আকারে দশগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। ফলে বারবার ক্ষুধা লাগা বন্ধ হয়। কমে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও।

পাচনতন্ত্রের উন্নতি করে

ইসুবগুলের ভুসি পাচনতন্ত্রের উন্নতি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং কোলন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। যার ফলে এটি চর্বি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে, সেইসঙ্গে চর্বি পোড়াতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

প্রাপ্তবয়স্করা তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর নির্ভর করে দিনে একবার বা দুবার ইসুবগুলের ভুসি খেতে পারেন। এক গ্লাস পানি বা ফলের রসে মিশিয়ে নিয়ে খাবেন। খাবারের পরপরই এটি খাওয়া সবচেয়ে ভালো। আপনি যদি দীর্ঘকালীন কোনো শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে ইসুবগুল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।