করোনায় আক্রান্ত হলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেওয়া চলবে না। যদিও এসময় খাবারের রুচি কমে যায়, স্বাদ-গন্ধের অনুভূতিও থাকে না। কিন্তু আপনাকে খেতেই হবে। ভাইরাসের সংক্রমণে এসময় আপনি খুবই দুর্বল অনুভব করবেন। তাই করোনায় আক্রান্ত হলে সঠিক ডায়েট মেনে চলা জরুরি। নিয়ম মেনে খাবার খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব হবে, শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠাও সহজ হবে।

কলকাতার নিউট্রিশন রিসার্চার স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন করোনায় আক্রান্ত রোগীর ডায়েট কেমন হওয়া উচিত। তিনি বলেন,‌ ‘হোম আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীকে একটি ব্যালেন্সড স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলতে হবে। খাবারের মাধ্যমে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণ করতে হবে। প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য রোগীকে মাছ কিংবা ডিম সেদ্ধ খেতে হবে। সেইসঙ্গে মুরগির মাংসও চলতে পারে। তবে কোনোভাবেই রেড মিট খাওয়া চলবে না। রান্না করতে হবে অলিভ অয়েল বা সয়াবিন তেলে। যেসব খাবারে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকা প্রয়োজন, সেগুলো খেতে হবে’।

শরীর আর্দ্র রাখতে হবে

করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে সারাদিনে অন্তত ১০ গ্লাস পানি খেতে হবে। সাধারণ পানি ছাড়াও ওরস্যালাইন কিংবা ডাবের পানি দিনে দুইবার খেতে হবে। রোগীর শরীরে যেন কোনোভাবেই পানিশূন্যতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

বারবার খেতে হবে

সারাদিনে কেবল তিনবেলা খেলে তা যথেষ্ট নয়। ছোট ছোট মিল খেতে হবে দিনে ছয় থেকে আটটি। বিভিন্ন পদের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খেতে হবে। তার সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন। এ ধরনের খাবার দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে।

ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার

করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খেতে হবে। চিকিৎসকেরাই আপনাকে এ জাতীয় খাবার খাওয়ার জন্য বলবেন। আপনি যদি নিয়মিত ভিটামিন সি গ্রহণ করেন তা শরীরের জন্য উপকারী হবে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে। তবে তা যেন অতিরিক্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। প্রতিদিন ৩৫০ গ্রাম আঙুর বা মাল্টা খেতে পারেন। একবারে না খেয়ে দুই ভাগ করে দিনে দুইবার খেতে পারেন। 

নিয়ম মেনে চলুন

করোনায় আক্রান্ত হলে কোনোভাবেই ভেঙে পড়বেন না। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখুন। দিনে তিন-পাঁচবার গার্গল করুন। সহজে হজম হয় এমন খাবার খান। এসময় হজমে সমস্যা হতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। প্রতিদিন অবশ্যই ব্রিদিং এক্সারসাইজ করবেন। এতে ফুসফুস ভালো থাকবে। শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হতে দেবেন না। পর্যাপ্ত ঘুমও আপনাকে করোনা থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করবে।