আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে শিশুকে শূন্যে ছুড়ে আদর করার। কেউ কেউ আবার শিশুকে শূন্যে তুলে ঝাঁকিয়েও থাকেন। আপনারও কি এমন অভ্যাস আছে? যদি থেকে থাকে তবে সতর্ক হোন। অন্য কেউ এমনটা করলে তাকেও নিষেধ করুন। কারণ আপনি নিছকই আদর করতে গিয়ে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করে ফেলতে পারেন! এর কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে কোমায় চলে যেতে পারে শিশু, এমনকী হতে পারে মৃত্যুও!

শিশুকে শান্ত রাখা আসলেই একটি কঠিন কাজ। তার কান্না থামানো বা তার দুরন্তপনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে অনেককিছুই আপনাকে করতে হয়। অনেকে শিশুকে আদর করতে গিয়ে তাকে শূন্যে ছুড়ে আবার ধরে ফেলেন। এতে শিশু আনন্দিত হয়, তার কান্না থেমে যায়। কিন্তু সেখান থেকেই হতে পারে ক্ষতির শুরু, তৈরি হতে পারে ভয়াবহ বিপদ। শিশুকে আদর করুন তবে তা যেন নিরাপদ হয়। শিশুর যত্ন নিন, তবে শূন্যে ছুড়ে দেওয়া বা ঝাঁকানো বন্ধ করুন।

গবেষণা কী বলছে

সম্প্রতি এক মার্কিন গবেষণায় প্রকাশ হয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রায় ৮০ শতাংশ চিকিত্‍সক দাবি করেছেন, ৩ বছরের ছোট শিশুকে ঝাঁকানো হলে বা শূন্যে ছুড়ে দিলে শিশুর মস্তিষ্ক থেকে রক্ত বের হতে পারে। একে বলা হয় সাবডুরাল হেমাটোমা। প্রায় ৯০ শতাংশ চিকিৎসকের মতে, এরকম ক্ষেত্রে শিশুর মারাত্মক রেটিনাল রক্তক্ষরণও হতে পারে। অপরদিকে ৭৮ শতাংশ চিকিত্‍সক জানিয়েছেন, এর ফলে শিশুটি কোমায় চলে যেতে পারে, হতে পারে মৃত্যুও।

যেসব ক্ষতি হতে পারে ও তার কারণ

শিশুকে যখন ঝাঁকানো হয় বা শূন্যে ছুঁড়ে মারা হয় তখন তার মস্তিষ্ক বারবার খুলির গায়ে ধাক্কা খায়। এর ফলে ছিঁড়ে যেতে পারে তার মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝের ছোট ছোট রক্তনালি। যে কারণে শুরু হতে পারে রক্তক্ষরণ। জমাট বেঁধে যেতে পারে রক্ত। তখন সেই অংশ ফুলে যেতে পারে। শিশুর ঘাড় সংবেদনশীল হওয়ার কারণে যখন তাকে ঝাঁকানো হয় তখন পেশি ছিঁড়ে যেতে পারে। এর ফলে স্পাইনাল কর্ড হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। মস্তিষ্কে মারাত্মক ইনজুরির কারণে শিশু পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। এটি হতে পারে শিশুর অন্ধত্বের কারণ। শিশু অন্ধ-বধিরও হয়ে যেতে পারে।