অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এসেছে তরুণ কবি ও প্রাবন্ধিক সৌম্য সালেকের নতুন দুটি বই। কবিতাগ্রন্থ ‘পার্কবেঞ্চের কবিতা’ পাওয়া যাচ্ছে কবি প্রকাশনীর ৮১-৮২ স্টলে এবং ভ্রমণকাহিনি ‘মোমের পুতুল মমির দেশে’ পাওয়া যাচ্ছে প্রসিদ্ধ পাবলিশার্সের ৩৭২ নম্বর স্টলে। 

‘পার্কবেঞ্চের কবিতা’ সম্পর্কে কবি বলেন, পার্কবেঞ্চ সকলের জন্য উন্মুক্ত। এখানে বাধাহীনভাবে সকলে যেমন বসতে পারে, তেমনি গাইতে পারে, পড়তে পারে এবং ভাবতে পারে জীবনের বিচিত্র বিষয়। শহরে পার্কে এবং পথের পাশেও পার্কবেঞ্চের শোভাসন আমরা দেখতে পাই। পার্কবেঞ্চে আড্ডা ও নন্দন চর্চার বিচিত্র সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। প্যারিসে পার্কবেঞ্চে বসে শিল্পীরা দিনভর অপেক্ষা করেন কখন উপযুক্ত আলো নিসর্গে নেমে আসবে এবং আলো-ছায়ার সে খেলা শিল্পীরা পটে তুলে নেন তাদের বর্ণশোভায়। পার্কবেঞ্চে বসে আয়েসে-উদাসে জীবনের যে বিচিত্র ভাবের উন্মেষ ঘটে সেসব বিচ্ছিন্ন ভাবনার প্রকল্প আমার ‘পার্কবেঞ্চের কবিতা’। 

কাব্যগ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। এতে চল্লিশটি কবিতা স্থান পেয়েছে বলে জানিয়েছেন কবি।  

মিশর সফরের ওপর লেখা ভ্রমণকাহিনি ‘মোমের পুতুল মমির দেশে’ সম্পর্কে সৌম্য সালেক বলেন, সভ্যতার সূতিকাগার মিশরে রয়েছে সাত হাজার বছরের গৌরবময় ইতিহাস। নীলনদের অদূরে গড়ে ওঠা প্রাচীন পৃথিবীর সুউচ্চ শৃঙ্গ পিরামিড, পুরোনো ধর্মশালা আর সাড়ে চার হাজার বছর আগের মানুষের অবিকল দেহের মমি মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম স্মারক হিসেবে এখনো জাজ্বল্যমান। পৃথিবীতে মানুষের সঙ্ঘবদ্ধ অবস্থান ও বসবাসের সুলুক-সন্ধানের জন্য ইতিহাসবিদ, প্রত্নতাত্ত্বিক, লেখক, গবেষক, পাঠক এবং রহস্য-অনুরাগী পর্যটকের আগ্রহের শীর্ষে আজও মিশর। ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মিশর সফর শেষে লিখেছিলেন, ‘যে ব্যক্তি মিশর দেখেছেন, সে অবশ্যই উপলব্ধি করবে যে এটি একটি স্বোপার্জিত দেশ যা নীলনদের দান।’ 

তিনি বলেন, এ রচনা আরম্ভ হয়েছে নির্ঘুম নগরী কায়রোর রাতের বর্ণনা দিয়ে। তারপর ভ্রমণের সাথে সাথে ঘটনাও ঘুরেছে কায়রো সিটাডেল, আল আজহার, আলমাসা, সালাউদ্দিন আইয়ুবির দুর্গ, কায়রো অপেরা হাউস, আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরি, সেরাপিয়াম, বাতিঘর ও কাইতবে দুর্গ, ভূমধ্যসাগর, গিজার মহাপিরামিড, ইজিপ্সিয়ান মিউজিয়াম, ফেস্টিভ্যাল সিটি মল, নীল নদ এবং মরু সাহারার পথে পথে। এখানে বর্ণনার মাঝে নেই তথ্য-উদ্ধৃতির ঘনঘটা। বরং সংশ্লিষ্ট নিদর্শনের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্তের পাশাপাশি বরেণ্য কবিগণের পঙক্তিমালার বাকপ্রবাহ ধারায় রচিত হয়েছে এ সফরনামা। এখানে সীমিত আয়তনে প্রাঞ্জল ভাষায় বস্তুনিষ্ঠ তথ্যে রচনার পাশাপাশি রঙিন ছবি উপস্থাপনায় মিশরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নান্দনিক আলেখ্য পরিবেশনার প্রয়াস চালিয়েছি। পর্যটনপ্রিয় লেখক-পাঠকের সমাদর পেলেই এ লেখা সার্থক হবে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।

মেলায় সৌম্য সালেকের আরো কিছু বই রয়েছে। তারমধ্যে সময় প্রকাশনের ৮নং প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাচ্ছে কবিতাগ্রন্থ ‘পাতাঝরার অর্কেস্ট্রা’ ও প্রবন্ধগ্রন্থ ‘শব্দ চিত্র মত ও মতবাদ’ এবং দেশজ প্রকাশনের ৫৪৩ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে কবিতার বই ‘ঊষা ও গামিনি।’

এইচকে