অমর একুশে বইমেলার ১৭তম দিনে ১৭১টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতা। উদ্বোধন করা হয়েছে বই সংলাপ ও রিকশাচিত্র মঞ্চের। ছুটির দিন হওয়ায় দিনভর প্রাণবন্ত এবং উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল পুরো মেলাজুড়ে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেলায় ছিল শিশুপ্রহর।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানানো হয়েছে, সকাল ১০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক শাখায় ১ম হয়েছেন নীলান্তী নীলাম্বরী তিতির, ২য় হয়েছেন রোদসী আদৃতা এবং ৩য় হয়েছেন নৈঋতা ভৌমিক। খ শাখায় ১ম হয়েছেন তানজিম বিন তাজ প্রত্যয়, ২য় হয়েছেন সুরাইয়া আক্তার এবং ৩য় হয়েছেন রোদসী নূর সিদ্দিকী। গ শাখায় ১ম হয়েছেন কে. এম. মুনিফ ফারহান দীপ্ত, ২য় হয়েছেন নবজিৎ সাহা এবং ৩য় হয়েছেন সরকার একান্ত ঐতিহ্য।

প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সংগীত-ব্যক্তিত্ব শেখ সাদী খান, মো. ইয়াকুব আলী খান এবং চন্দনা মজুমদার। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : শহীদ সাবের এবং স্মরণ : পান্না কায়সার শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মনির ইউসুফ এবং মামুন সিদ্দিকী।

শহীদ সাবের : আধুনিকতার বেদনা ও মহিম শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে মনির ইউসুফ বলেন, শহীদ সাবের তার সাহসী, বেদনাদগ্ধ, সংবেদনশীল, সরল-সুন্দর, গভীর ধ্যানমগ্ন চোখে এই ভূমিকে আত্মস্থ করেছিলেন। মানব-মহত্ত্ব ও মানুষের মুক্তির প্রশ্নে তিনি কখনও আপস করেননি। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি মানবমুক্তির পথ, মার্কসীয় দর্শন, প্রগতি ও সৌন্দর্যচেতনা আঁকড়ে ধরেছিলেন। শিল্পের সাধনায় উৎসর্গ করেছিলেন নিজের জীবন।

সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, বিপ্লবী চিন্তাচেতনার অধিকারী শহীদ সাবের মানুষের কল্যাণের জন্য এবং একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। আর পান্না কায়সার ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ একজন সংগ্রামী নারী। তাদের আদর্শ, চিন্তাচেতনা ও কর্ম সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে অবহিত করতে হবে।

আজ লেখক বলছি- অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি শান্তা মারিয়া, কথাসাহিত্যিক এশরার লতিফ, শিশুসাহিত্যিক আহসান মালেক এবং প্রাবন্ধিক সুমন শামস্।

বই সংলাপ ও রিকশাচিত্র মঞ্চের উদ্বোধন

অমর একুশে বইমেলায় আজ প্রথমবারের মতো সংযোজিত ‘বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চ’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান বিকেল ৫টায় মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের লেকসংলগ্ন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়। মঞ্চের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান, আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি, বাংলা একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর এবং বাংলা একাডেমির পরিচালকরা। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই মঞ্চে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রিকশাচিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি মেলায় প্রকাশিত মানসম্পন্ন নির্বাচিত বই নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান চলবে।

বইমেলার রোববারের সময়সূচি

রোববার অমর একুশে বইমেলার ১৮তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ : জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন স্বরোচিষ সরকার। আলোচনায় অংশ নেবেন করবেন লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং এম আবদুল আলীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কামাল চৌধুরী।

আরএইচটি/জেডএস