জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেছেন, ‘ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম’ ঢাকায় অবস্থানরত চাঁদপুরের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধের সূচনা স্থল। চাঁদপুরের সাংবাদিকদের একে অপরের পাশে দাঁড়ানো, সহযোগিতার মানসিকতা এই সংগঠন তৈরি করে দিতে পারে। আমরা ঢাকায় অবস্থানরত চাঁদপুরের সাংবাদিকরা একটা ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হলে সেটার সফলতা অনিবার্য।

তিনি বলেন, সাংবাদিকতার পেশাগত অবস্থান থেকে আমাদের লেখনির মাধ্যমে চাঁদপুরের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির চোখে আঙুল দিয়ে আমরা দেখিয়ে দেব, চাঁদপুরবাসীর জন্য এই কাজগুলো করা দরকার। আমরা আধুনিক চাঁদপুর চাই। দুর্নীতিমুক্ত চাঁদপুর চাই। চাঁদপুরের মানুষেরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, অত্যাচারিত না হয়। আমরা সেই প্রত্যাশা করি। এই প্রত্যাশায় যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে দৈনিক আমাদের সময়ের উপ-সম্পাদক মিজান মালিককে সভাপতি ও দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিনের সম্পাদক এ কে এম রাশেদ শাহরিয়ার পলাশকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত করা হয়।

মিজান মালিকের সভাপতিত্বে ও এ কে এম রাশেদ শাহরিয়ার পলাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম।

আরও বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ফারুক হোসেন ও ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার।

এ সময় ফোরামের সদস্য বিভিন্ন পত্রিকা, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, চাঁদপুর জেলার বহু মেধাবী মানুষ ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত। এক সময় পাঁচ জন মন্ত্রী পেয়েছিল চাঁদপুর। প্রধানমন্ত্রীও পেয়েছে চাঁদপুর। তবে সেই অনুযায়ী স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে চাঁদপুরে সেভাবে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এটা চাঁদপুরবাসীর দুর্ভাগ্য। চাঁদপুরে এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ হবে। এটা দারুণ। কিন্তু এগুলো হলে এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে যেসব শিক্ষার্থী পড়তে আসবে তখন তারা চাঁদপুর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাই পাবে। চাঁদপুরের এসব সীমাবদ্ধতা দূর করতে ঢাকাস্থ চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরামের মতো দু-একটি সংগঠন জরুরি।

তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে আমাদের মাটির (চাঁদপুর) প্রতি যে দায়বদ্ধতা আছে সেটা পূরণ করি। পেশাজীবী হিসেবে ঢাকায় যারা আছি তারা যেন শক্ত মাটির ওপর সাংবাদিকতা করতে পারি সেই চেষ্টা করি। ঢাকায় যে যত বড় পদ-পদবির হই না কেন চাঁদপুরকে নিয়েই আমাদের বেশি করে ভাবতে হবে। চাঁদপুরে মানুষের সুখ-দুঃখ, দুর্দশার কথা আমাদের লিখতে হবে।

সাবেক সচিব মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, চাঁদপুরকে মেঘনার গ্রাস থেকে রক্ষা করতে বাঁধ নির্মাণ, বালু সন্ত্রাসদের রুখে দেওয়া, জেলার বাসিন্দাদের দুর্ভোগচিত্র লেখনির মাধ্যমে যথাযথভাবে তুলে ধরতে হবে। আপনাদের লেখার অনেক দাম। আপনারা লেখার মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন।

সভাপতি মিজান মালিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন চাঁদপুর নামটাই বেশ সুন্দর। কিন্তু চাঁদপুরে বর্তমানে রাস্তাঘাট ভাঙা, ভালো কোনো পর্যটন কেন্দ্র নেই। এই জায়গাটা নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি। পত্রিকায় চাঁদপুরের এসব দুর্ভোগ নিয়ে লিখতে পারি। আমাদের এসব লেখনি সংশ্লিষ্টদের চোখে পড়লে চাঁদপুরের সেসব দুর্দশা দূর হবে। চাঁদপুরে উন্নত মানের পর্যটন কেন্দ্র নেই। এতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে আমাদের এই ফোরাম।

এসএসএইচ