নিবন্ধনের জন্য সরকারের কাছে ৫শর বেশি ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন বা আইপি টিভির আবেদন জমা পড়েছে। এরমধ্যে চলতি মাসে (আগস্ট) ১০ থেকে ১৫টি আইপি টিভির অনুমোদন দেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

জানা যায়, যাচাই-বাছাইয়ের পর জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার আলোকে এসব আইপি টিভিকে নিবন্ধন দেবে সরকার। পর্যায়ক্রমে আরও আইপি টিভিকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। 

জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালায় নিবন্ধন সম্পর্কে বলা হয়, সকল অনলাইন গণমাধ্যমকে কমিশনের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। তবে কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো সংযুক্ত সংস্থা নিবন্ধনের দায়িত্ব পালন করবে। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট বিধি-বিধান অনুসরণ করে অনলাইন গণমাধ্যমকে নিবন্ধিত করবে। বিদ্যমান অনলাইন গণমাধ্যমগুলো শর্তপূরণ সাপেক্ষে নিবন্ধিত হবে। 

এতে আরও বলা হয়, সরকার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে নিবন্ধন প্রদানের ক্ষেত্রে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করবে। এতে নিবন্ধন প্রদান পদ্ধতি, যোগ্যতা ও অযোগ্যতা, বাতিলের বিধান বর্ণিত থাকবে। এ সম্পর্কিত আইন/বিধিমালা প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অথবা আইন/বিধিমালা/নীতিমালায় অস্পষ্টতা থাকলে সরকার এ সব বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। নিবন্ধন পাওয়া সকল অনলাইন গণমাধ্যম সরকারের কাছে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার আওতায় আপাতত ১০ থেকে ১৫টি আইপি টিভিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে। এ মাসের মধ্যেই এসব আইপি টিভিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে। পরে ধাপে-ধাপে আরও কিছু আইপি টিভিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে। 

তবে নিবন্ধন পেলেও আইপি টিভি থেকে সংবাদ প্রচার করা যাবে না। জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালায় স্পষ্টভাবে এ শর্ত বলা হয়েছে। 
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (টিভি-২) রুজিনা সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইপি টিভি নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যেগুলোর আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলো থেকেই নিবন্ধন দেওয়া হবে। 

সম্প্রতি মহিলা লীগের উপকমিটির পদ হারানো জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করার পর তার মালিকানাধীন আইপি টিভি জয়যাত্রার অফিসও বন্ধ করে দেয় র‍্যাব। ইতোমধ্যে টেলিযোগাযোগ আইনে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়েছে। র‍্যাব-৪ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইদ্রিস আলী গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর পল্লবী থানায় এই মামলা করেন।

অভিযোগ উঠেছে, আইপি টিভি খুলে দেশে-বিদেশে বিপুলসংখ্যক প্রতিনিধি নিয়োগ দেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেওয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হয়েছে। 

ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে

গত ২ আগস্ট সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যেহেতু আমরা অনুমোদন দেওয়া শুরু করিনি তাই কোনো আইপি টিভিরই অনুমোদন নেই। তবে কিছু আইপি টিভির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সময়-সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করি। 

তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু আইপি টিভি ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালিত হয়, নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ায়। তবে কোনো অভিযোগ নজরে আনলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ইতোমধ্যে অনেকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

এসএইচআর/এইচকে/এনএফ