ডে-কেয়ারে শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করলে ১০ বছর জেল
ডে-কেয়ার সেন্টার বা শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে কোনো শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ, নিরাপত্তা বিপন্ন, কর্তব্য অবহেলা করলে এবং শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর জেল এবং ৫ লাখ টাকার জরিমানার বিধান রেখে ‘শিশু দিবাযত্ন আইন-২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ খসড়া আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা নিজ নিজ দপ্তর থেকে সংযুক্ত হন।
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ আইন বেশ কয়েক বছর ধরে মন্ত্রিসভায় তোলার জন্য ঘুরছিল। আজকের সভায় এ আইনটির প্রাথমিক খসড়া নিয়ে এসেছিল, খসড়া আইনে যথেষ্ট বলে মন্ত্রিসভা এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
আইনের খুঁটিনাটি প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত কোনো প্রতিষ্ঠান এসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে। একই সঙ্গে ব্যক্তি পর্যায়ের পরিচালিত শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র নিবন্ধন নিয়ে এখন থেকে পরিচালনা করতে পারবে।
বিজ্ঞাপন
নিবন্ধন, কেন্দ্র পরিচালনার জন্য নির্ধারিত একটি নীতিমালা করবে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়। এসব নীতিমালায় শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সেবা সুরক্ষা, খেলাখুলা সব নিশ্চিত করতে হবে, বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, তিন মাস অন্তর অন্তর এসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র অভিভাবকদের নিয়ে মত বিনিয়ম করতে হবে। মা দিবসের আদলে এটা হবে।
এ আইনটি পাস হওয়ার পর অনুমোদন ছাড়া কেউ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে না। আইনে শিশুর প্রতি কেউ যদি নিষ্ঠুর আচরণ, অবহেলা, নিরাপত্তা বিপন্ন বা হারিয়ে গেলে শাস্তির ধরন অনুযায়ী সর্বোচ্চ দশ বছর জেল এবং ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আইনের ২৬ ধারায় এ জেল-জরিমানার কথা বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এসব শিশুযত্ন কেন্দ্র পরিচালনার জন্য আলাদা একটি নীতিমালা করা হবে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। উন্নয়ন সংস্থাগুলো এই আইনটি করার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছিল। এ আইনের না করলে তাদের সাহায্য পেতে সহজ হবে।
বর্তমানে দেশে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১১৯টি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে। এ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই সবাইকে ৬ মাসের নিবন্ধন করতে হবে।
জানা গেছে, পরিচালিত শিশু দিবাযত্ন কর্মসূচির আওতায় কর্মজীবী মায়েদের শিশুদের (৬ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত) দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে সেবা দেওয়ার মাধ্যমে স্ব স্ব কর্মস্থলে নিশ্চিন্তে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।
এনএম/জেডএস