চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া নারীদের মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার সেলিমের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১ মার্চ) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই)  আবছার উদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, পাঁশলাইশ থানার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার সেলিমকে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। 

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া নারীদের মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সেলিম অস্থায়ী ভিত্তিতে চমেক হাসপাতালের মর্গে পাহারাদার হিসেবে কাজ করছিলেন। এরপর সোমবার তার বিরুদ্ধে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সিআইডি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। 

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, গ্রেপ্তার সেলিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই নারীর সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকার করেছে। 

বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল মাসে চান্দগাঁও ও চকবাজার এলাকা থেকে দুটি মরদেহ আসে। এর মধ্যে একটি ১২-১৩ বছরের এক মেয়ে ছিল। দুইজনের সঙ্গে সেলিম বিকৃত যৌনাচার করে। ডিএনএ প্রোফাইলিং করার জন্য চিকিৎসকরা সিআইডিতে সোয়াব পাঠান। তখন প্রোফাইলিং করতে গিয়ে দুইজনের শরীরেই এক ব্যক্তির শুক্রাণু পাওয়া যায়। পরে তদন্ত করে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

সিআইডির সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১২ বছরের এক কিশোরীর মরদেহ আসে চমেক হাসপাতালের মর্গে। একইভাবে এপ্রিল মাসেও আরেক নারীর মরদেহ আসে মর্গে। ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে চিকিৎসকরা মৃতদেহ দুটিতেই এইচভিএস (হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব) পান। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডিতে পাঠানো হয়। সিআইডির ডিএনএ ল্যাবের বিশেষজ্ঞরা মত দেন দুটি মরদেহেই একই পুরুষের শুক্রাণু। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে সিআইডি। 

তদন্ত নেমে সিআইডি জানতে পারে, সেলিম মর্গে দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতেন। কোনো অল্প বয়সী নারীর মরদেহ মর্গে আনা হলে পরের দিন কিংবা কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে লাশগুলোর সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করে সেলিম। 

কেএম/এসকেডি