৮২ কোটি টাকা আত্মসাতে আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার ও ফাস (এফএএস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাফিজসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক)। 

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ দফতর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে এস এ এন্টারপ্রাইজ নামীয় অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ৪২ কোটি ও সন্দ্বীপ করপোরেশন নামীয় অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ৪০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার নামে আত্মসাৎ হয়েছে।

দুটি মামলায় এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, উজ্জ্বল কুমার নন্দীসহ ১২ জন পরিচালক এবং পিকে হালদার ও এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাসেল শাহরিয়ারসহ মামলায় মোট ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রথম মামলার ২০ আসামি হলেন, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, সন্দ্বীপ করপোরেশনের মালিক স্বপন কুমার মিস্ত্রি, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, পরিচালক এম, এ হাফিজ, মো. আবুল শাহজাহান, ডা. উদ্দাব মল্লিক, অরুণ কুমার কুন্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, প্রদীপ কুমার নন্দী, কাজী মাহজাবিন মমতাজ, মাহফুজা রহমান বেবী, সোমা ঘোষ, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, অনিতা কর ও স্বতন্ত্র পরিচালক বীরেন্দ্র কুমার সোম, এফএএস ফাইন্যান্সের শাখা ব্যবস্থাপক তানভির আহমেদ কমল, সাবেক এসভিপি মো. আজিমুল হক ও সাবেক এসইভিপি প্রাণ গৌরাঙ্গ রায়। এ মামলায় ৪০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলার ৮ আসামিরা হলেন, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, এস এ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শাহ আলম শেখ, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, পরিচালক উজ্জল কুমার নন্দী, অরুণ কুমার কুন্ডু ও অঞ্জন কুমার রায়।

এ মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ও অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান এস. এ এন্টারপ্রাইজের নামে জাল রেকর্ডপত্র প্রস্তুত করে। অস্তিত্ববিহীন এ প্রতিষ্ঠানের মালিককে জামানত ছাড়াই ঋণ পেতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্টের কর্মকর্তারা। তাদের সহায়তায় ৪২ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৩ মামলার অনুমোদন দেয় দুদক। ভুয়া ও কাগুজে ১৩ প্রতিষ্ঠানের নামে জাল নথিপত্র প্রস্তুত করে অর্থ আত্মসাতের ওই ঘটনা ঘটে। পর্যায়ক্রমে মামলাগুলো দায়ের করা হচ্ছে।

ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ ওঠার পর এখন পর্যন্ত ৩০ মামলা দায়ের করেছে দুদক।

আরএম/জেডএস