দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে সড়কে সংঘটিত সব হত্যার বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ ৯ দাবিতে রাজধানীর বনানীর সড়কে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক শেষে তারা দাবি আদায়ের বিষয়ে আশ্বাস পাওয়ার পর সড়ক থেকে সরে যান।

রোববার (১৩ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এর আগে বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির বিষয়ে চেয়ারম্যানকে জানান।
 
বিআরটিএ চেয়ারম্যান আন্দোলনকারীদের জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বিআরটিএ মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সপ্তাহের ছয়দিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। 

ওয়েবিলের নামে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বিআরটিএর কাছে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এরপর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। 

তিনি আন্দোলনকারীদের জানান, সড়কে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রথমে বিআরটিএ ভবনের সামনে অবস্থান নেয়  নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বনানীর প্রধান সড়কে নামে এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে  থাকে। এসময় বনানী-মহাখালী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের যেসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো: 

১. দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে সব সড়ক হত্যার বিচার করতে হবে ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

২. ঢাকাসহ সারাদেশে সব গণপরিবহনে (সড়ক,নৌ, রেল) শিক্ষার্থীদের হাফ পাস নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে ।

৩. গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং জনসাধারণের চলাচলের জন্য যথাস্থানে ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যাবস্থা দ্রুততর সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।

৪. পরিবহন শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশ ও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সব যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকের যথাযথ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

৫. পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং স্পেস নির্মাণ এবং যথাযথ ব্যাবহার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।

৬. দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নিতে হবে। 

৭.  যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনতে হবে এবং বিআরটিএ'র সব কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে ঢাকাসহ সারাদেশে ট্রাফিক ব্যাবস্থাপনা অবিলম্বে স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন এবং পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

৯. ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে।

পিএসডি/জেডএস