বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার পৃথক শোকবার্তায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন তারা।

শোক বার্তায় সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন আবদুল হামিদ।

পৃথক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

সাহাবুদ্দিনের মৃত্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর শোক

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি শোক জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

শোকবার্তায় দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বলেন, ৯০’র স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক বিচারপতি সাহাবুদ্দিন যে ভূমিকা তা জাতি স্মরণ রাখবে। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার নেতৃত্বে দেশে একটি সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন হয়, যা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা পায়।

আজ (১৯ মার্চ) পৃথক-পৃথক শোক বার্তায় রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা এসব কথা বলেন।

সাহাবুদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, মহান আল্লাহ যেন তার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।

শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। শোক বার্তায় তারা বলেন, ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার নেতৃত্বে দেশে একটি সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন হয়, যা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা পায়। সাহাবুদ্দিন আহমদের পরামর্শক্রমে দেশের সংবিধানের ১১তম সংশোধনীটি আনা হয়। এর ফলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের পরও তিনি ১৯৯১ সালের ১০ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে সুপ্রিম কোর্টে ফিরে যান এবং ১৯৯৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সেই টালমাটাল দিনে জাতির অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেছেন উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, তার অবদান দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তারা বলেন, ৯০’র স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে তার যে ভূমিকা, তা জাতি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে স্মরণ রাখবে।

উল্লেখ্য, শনিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাবেক এ প্রধান বিচারপতি।

ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সাহাবুদ্দীন আহমদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীন আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা আহমদ।

তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ ও ষষ্ঠ প্রধান বিচারপতি এবং দু’বার দায়িত্বপালনকারী রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি প্রথমে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হতে ১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকাকালীন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এসকেডি