কূট‌নৈ‌তিক সম্প‌র্কের সুবর্ণজয়ন্তী‌তে অষ্টম অংশীদারিত্ব সংলাপে ব‌সে‌ছে বাংলা‌দেশ ও মা‌র্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (২০ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বেলা সোয়া ১১টার পর বৈঠক‌টি শুরু হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ের তথ‌্য বল‌ছে, দুই বছর বিরতির পর ঢাকা ও ওয়া‌শিংট‌নের ম‌ধ্যে শুরু হওয়া বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দি‌চ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চল‌বে বৈঠক‌টি।

আশা করা হ‌চ্ছে, বৈঠকে র‌্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জোর দিবে ঢাকা। অন্যদিকে ওয়াশিংটন মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আইপিএসে গুরত্ব দেবে।

বৈঠক নি‌য়ে শ‌নিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অ্যানগেজমেন্ট বাড়াতে চাই। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, ব্যবসা-বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করা কিংবা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাদের আরও সম্পৃক্ততা চাই আমরা। তাছাড়া র‌্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে করতে চাই আমরা। এটা নিয়ে তাদের সহযোগিতা চাইবে ঢাকা।

ঢাকা ও ওয়াশিংটনের অষ্টম অংশীদারিত্ব সংলাপে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক। আমরা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বাড়াতে চাই। আমরা তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে চাই। আমরা তাদের কাছ থেকে বিনিয়োগ চাই। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু, জিএসপি পুনর্বহাল বা সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি আমরা তুলব।

র‌্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা হবে কিনা-জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, র‌্যাবের উপর আমাদের জনগণের আস্থা রয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলছি, তোমরা সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই কর। আমরা চাই র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুক তারা, এটা আমরা তাদের বলব। আর ইউক্রেন ইস্যুতে কূটনৈতিকভাবে সমাধান হোক সেটাই আমাদের চাওয়া। আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই সংলাপের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হোক।

মন্ত্রণালয়ের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আমরা অবশ্যই গুরুত্ব দেবো। যুক্তরাষ্ট্র বোঝানোর চেষ্টা করা হবে, যেন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। তাছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, কোভিড সহযোগিতা, জলবায়ু ইস্যু, জিএসপি পুনর্বহাল, দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সফর বিনিময়, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার এসব বিষয় থাকবে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকার পক্ষ থেকে রাজনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে গুরত্ব দেওয়া হবে। অন্যদিকে ওয়াশিংটন চাইবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল তথা আইপিএসে ঢাকা যেন দেশটির সঙ্গে কাজ করে। এছাড়া মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, শ্রম অধিকার পরিস্থিতি, গণতন্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবে দেশটি।

এনআই/আইএসএইচ