বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় হরিজন জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বর্ণ বৈষম্য বিলোপ আইন দ্রুত পাস করা এবং আইনটি কার্যকরী প্রচারণার জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করাসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান পরিষদের মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস।

পরিষদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশে সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, বিভিন্ন হাটবাজার, গ্রাম-গঞ্জসহ সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও বসবাসরত হরিজনদের স্থায়ী এবং আধুনিক জীবন যাপনের সকল সুবিধাসহ বাসস্থানের ব্যবস্থা করা; সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ সকল প্রতিষ্ঠানে ৮০ শতাংশ কোটার যথাযথ বাস্তাবায়ন ও শিক্ষাগত যোগ্যাতা অনুযায়ী সকল হরিজনদের চাকরি দেওয়া; পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদের লিখিত পরীক্ষা শিথীল করা এবং আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ বাতিল করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, জন্মগতভাবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ স্বাধীন এবং পূর্ণ মানবাধিকার ও সমমর্যাদার অধিকারী। বাংলাদেশের সংবিধানে সমতা, সমান সুযোগ এবং বৈষম্যবিরোধী বিধানাবলী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। বাংলাদেশে বসবাসরত এক বিশাল জনগোষ্ঠী যারা হরিজন নামে পরিচিত, যারা জাতিপ্ৰথা, পেশাগত কারণে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বহুমুখী ঘৃণা-বৈষম্য-বঞ্চনার শিকার হন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি নির্দিষ্ট পেশাজীবী মানুষ হিসেবে দলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ হরিজন জনগোষ্ঠীর বসবাস। অথচ রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক বৈষম্য, অস্পৃশ্যতা, ঘৃণা, পেশাচ্যুতি, ভূমিদখল, অবহেলা, নিরাপত্তাহীনতা, রাষ্ট্রীয় পরিষেবা না পাওয়া ইত্যাদি নানাবিধ অপ্রাপ্তি এই বিশাল সংখ্যক হরিজনদের মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্নকে এই বিংশ শতাব্দীতেও বাধাগ্রস্থ করে চলেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, শহর, বন্দর কিংবা গ্রাম-গঞ্জে যারা পেশাগতভাবে আবর্জনা পরিষ্কার ও মলমূত্র নিষ্কাশনের কাজে নিয়োজিত, কিন্তু শুধুমাত্র পেশাগত কারণে এই হরিজনরা সামাজিকভাবে নিগৃহীত, মর্যাদাহীন এবং বঞ্চিতদের মধ্যে বঞ্চিত। এদের বসবাস বা পরিবেশ সরেজমিনে দেখলেই মনে হয় এরা গহীন দ্বীপবাসী, তবে এদের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ লাল, উপদেষ্টা রতন লাল ডোম, ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি গজন লাল প্রমুখ।

এমএইচএন/এনএফ