খাল নালায় পড়ে প্রাণহানির ঘটনা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, আসলে দায়ী কেউ না। অনেক সময় হয় কি আমরা যে স্ল্যাব দেই, আমাদের এখানে এমনও কিছু লোক আছে যারা ওই স্ল্যাবগুলো রাতে তুলে নিয়ে উনাদের ঘরের আঙিনায় রাখেন। ওটা যখন খালি হয়ে যায়। আমরা দেখার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। সবগুলো তো খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না। এটা হলো বাস্তবতা। এবার আমরা কিন্তু সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্ল্যাব ও ফেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করছে।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে খাল-নালায় পড়ে প্রাণহানির ঘটনার জন্য দায়ীকে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিটি মেয়র এসব কথা বলেন।

এর আগে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ডোমখালী খালে নির্মিত রিটেইনিং ওয়াল, পাঁচটি ব্রিজ ও খাল সংলগ্ন রাস্তা ও ফুটপাতের  উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।

অনুষ্ঠানে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের বাইরে আরও ২১টি খাল রয়েছে। এগুলো থেকে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। খালগুলো পরিষ্কার করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। খালের ওপর যারা ঘর করেছে, খালের ওপর প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে তারা যত প্রভাবশালী ব্যক্তি হোক না কেন, খালের জায়গা, নালার জায়গা কেউ দখল করে রাখতে পারবে না। আমরা বর্ষাকাল এলে পানিতে ডুবে থাকব, আর খাল-নালা দখল করে নেবেন সেটা হবে না। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা নিয়েছে।

তিনি বলেন, যে খালগুলোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বর্ষার আগেই সেগুলো থেকে বাঁধ অপসারণ করে দিবে। মাটি অপসারণ করে দিবে। প্রকল্প পরিচালক বলেছেন এপ্রিলের শেষের দিকে খালের বাঁধগুলো সরিয়ে দিবে। পানিগুলো চলে যাবে। পানি যদি দ্রুত চলে যায়, তাহলে পানি নগরে জমবে না। খাল-নালা যদি পরিষ্কার হয়ে যায় তাহলে যে আশঙ্কা করছি বেশি পানি হবে, সেটা হয়ত নাও হতে পারে। খালের বাঁধগুলো অপসারণ করে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সিটি মেয়র বলেন, পানি উঠবেই। কারণ ভৌগোলিক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেই পানি যেন শহরে বেশিক্ষণ না থাকে। সহজে পানি যেন নিষ্কাশিত হয়ে যেতে পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা।

রেজাউল করিম বলেন, যার ঘরের সামনে ময়লা দেখব, যে ময়লা ফেলবে তার বিরুদ্ধে মামলাও করব, জরিমানাও করব। মানুষকে খালে ময়লা না ফেলার জন্য সচেতন করতে আমরা তিন মাস ধরে কাজ করছি। কেউ যাতে আমাদের দোষারোপ করতে না পারে। ময়লাগুলো বিনে জমিয়ে রাখবেন, সেকরা এসে নিয়ে যাবে। কোনো অভিযোগ থাকলে কাউন্সিলর ও আমাকে বলবেন। এ শহরকে পরিষ্কার দেখতে চাই।

জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ তো চলছে। কিছু কিছু খালের কাজ প্রায় সম্পন্ন। অনেকগুলো খালের কাজ এখনও বাকি আছে। খালগুলো পরিষ্কার করা হবে। এবারও যে জলাবদ্ধতা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হব— এটা চিন্তা করাটা ভুল হবে। কারণ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে আমাদের। প্রকল্পের কাজ একদিনে শেষ হওয়ার নয়। অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে।

সাতটি খালের দায়িত্বের বিষয়ে সিটি মেয়র বলেন, যে সাতটি খালের কাজ শেষ হয়েছে দরকার হলে এগুলো বুঝে নেব। কারণ আমরা চাই না দুই সংস্থার ঠেলাঠেলিতে জনগণ কষ্ট পাক। আমাদের মধ্যে সমন্বয় আছে।

অনুষ্ঠানে সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএম/এসএসএইচ