রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। রোববার রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পাস্তুরিত তরল দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা ও ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আজ থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত রাজধানীর ১০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ এ বিপণন কার্যক্রম চালু থাকবে। প্রাথমিকভাবে সচিবালয় সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি গোল চত্বর, জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, কালশী ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ বিপণন কার্যক্রম চলবে।

তিনি বলেন, মাংস, দুধ ও ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও সাপ্লাই চেইন সচল রেখে রমজান মাসে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখা আমাদের লক্ষ্য। চাহিদা ও দ্রব্যের সরবরাহ বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিসর বৃদ্ধির পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ভ্রাম্যমাণ বিপণনে ব্যবহৃত পরিবহনগুলোতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কারণ মানুষকে নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেওয়া সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনোভাবেই যাতে খাবারে ভেজাল না আসে, খাবার যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর বা জীবাণুযুক্ত না হয় এই বিষয়টিতে খামারিদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। খাবার যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্রি না হয়, সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গত বছর রমজান মাসে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং ডেইরি ও পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিপণন ব্যবস্থায় ৩৪ কোটি ৮৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭ টাকার পণ্য বিক্রয় হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১০ জন ভোক্তা এবং ৮১ হাজার ৩৭৭ জন খামারি সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।

কম মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রির পদক্ষেপ এর আগে কেউ নেয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে এ ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের সব কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, রমজান মাসে একজন লোকও যাতে কোনোভাবে কষ্ট না পায়, সেটা সরকারের লক্ষ্য। অধিক মুনাফা লাভ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। 

এছাড়া বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি মশিউর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলমসহ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প ভ্রাম্যমাণ এ বিক্রয় কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

এসএইচআর/আরএইচ