কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকা থেকে মানবপাচারকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বাঁশখালীর ছনুয়া সেলবন এলাকার মো. হোসেন অন্যতম। র‌্যাব বলছে, হোসেন মানবপাচার চক্রের অন্যতম সদস্য। ছেলের মাধ্যমে তিনি নিরীহ লোকজনকে মোজাম্বিক পাঠাতেন। মোজাম্বিক যাওয়ার পর চক্রের সদস্যরা পাচার হওয়া ব্যক্তিদের বিভিন্নভাবে অপহরণ করত। পরে অপহৃত ব্যক্তিদের পরিবারের কাছ থেকে মো. হোসেন মোটা অংকের মুক্তিপণ টাকা আদায় করত।

সোমবার (১১ এপ্রিল) চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

তিনি বলেন, মোক্তার আলী নামের একজন ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার হোসেন ও তার ছেলে এমরানের মাধ্যমে মোজাম্বিক যায়। সেখানে তিনি ছোট ব্যবসা করতেন। এরপর ২০১৭ সালে তিনি এই চক্রের মাধ্যমেই অপহৃত হন। আসামি হোসেনের ছেলে এমরান মোজাম্বিক থাকে। পরে আসামি হোসেনের ছেলে এমরান অপহৃত মোক্তারের ভাই জয়নালকে জানায়, তার বাবা হোসেন আলীকে নগদ ১০ লাখ টাকা দিলে মোক্তার হোসেনকে ছেড়ে দেবে। তখন জয়নাল আবেদীন তার ভাইকে ফিরে পেতে হোসেনকে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেন।

তারপরও মোক্তার আলীর কোনো খোঁজ না মেলায় জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে হোসেনসহ তার দুই ছেলে ও চার সহযোগীর বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় ২০১৭ সালে একটি মামলা করেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, টাকা দেওয়ার পাঁচ বছর পর জয়নাল তার ভাইয়ের কোনো খোঁজ পায়নি। গতকাল (রোববার) হোসেনকে গ্রেপ্তারের করা হয়েছে। হোসেন গ্রেপ্তারের পর জানিয়েছে, মোক্তারকে অপহরণ করার পরপরই মোজাম্বিকে মেরে ফেলা হয়েছে। তারপরও তারা পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করেছে।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক বলেন, মো. হোসেন মানবপাচার চক্রের অন্যতম সদস্য। ছেলের মাধ্যমে সে নিরীহ লোকজনকে মোজাম্বিক পাঠাত। তারপর চক্রের সদস্যরাই তাদের বিভিন্নভাবে অপহরণ করত। অপহৃত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে মো. হোসেন মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করত।

উল্লেখ্য, রোববার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বাঁশখালী এবং পেকুয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানবপাচার চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন— মো. ইসমাইল (৩২), শফিউল আলম (৩৭), রিয়াজ খান রাজু (৪১), মো. হোসেন (৬০) ও মো. ইউনুছ মাঝি (৫৬)। 

কেএম/এসএসএইচ