ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। বেতন-ভাতা (মাইলেজ) সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন না হওয়ায় বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে তারা ধর্মঘটে বসেন। এতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

দুপুর ১২টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি রানিং স্টাফদের ভাতা বাতিলের ঘোষণা সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। 

রেলমন্ত্রী বলেন, আমরা রেলের রানিং স্টাফদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করছি। তাদের দাবি আদায়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু গত ১০ এপ্রিল বেসমারিক কর্মচারীদের পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের ক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে কোনো ভাতা যোগ করার সুযোগ নেই বিধায়, রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে রানিং ভাতা, পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাবে নির্দেশক্রমে পুনরায় অর্থ বিভাগ অসম্মতি জানায়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এমন অবস্থানের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে যান। তাতে ট্রেন চলাচলে অচলাবস্থা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা এই অফিসিয়াল আদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১৯ এপ্রিল রেলের এ সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের শিডিউল রয়েছে। আশা করি তিনি রেলের সমস্যাগুলো সমাধানে সহযোগিতা করবেন। তাই এখন থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চালকদের প্রতি আহ্বান জানাই, বলেন রেলমন্ত্রী।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কথা হয়েছে। মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করবেন। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত থাকবে।

রেলওয়ে রাজস্ব বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ গেটকিপার পূর্ব-পশ্চিমের সমন্বয়কারী আল মামুন শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনস্বার্থ বিবেচনা করে আগামী ১৯ তারিখ পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। 

এর আগে সকালে আল মামুন শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বহুদিন ধরে কয়েকটি দাবির জন্য আন্দোলন করে আসছি। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে।

জানা গেছে, মূলত মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাত ৩টা ২০ মিনিট থেকে রেলপথে চালকসহ রানিং স্টাফরা ইঞ্জিন পরিচালনার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করা বন্ধ করে দেন।
 
পিএসডি/জেডএস