শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, গতকাল রাত থেকে সংঘর্ষের শুরু। আজ সকাল থেকে দুইপক্ষকে যদি দূরে রাখা যেত, তাহলে হয়ত প্রাণহানির ঘটনা ঘটত না।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে নিউ মার্কেট ও ঢাকা কলেজ এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেনকে দেখতে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে যান শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, আমরা তাকে (আহত মোশাররফ) দেখলাম। তার চোখে আঘাত লেগেছে। আমার সঙ্গে মোশাররফের কথা হয়েছে। ডাক্তারদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। তার যে চিকিৎসা প্রয়োজন, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আরও যা যা দরকার, সব ব্যবস্থা করব।

‘আমরা সবার খোঁজ নিচ্ছি। ঢাকা মেডিকেলে যাদের নেওয়া হয়েছে আমরা তাদেরও খোঁজ নেব। তাদের ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’

সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন- জানালে সাংবাদিকদের দীপু মনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তা এই পর্যন্ত গড়ানোর কোনো কারণই ছিল না। আপনাদের ফুটেজে দেখলাম, দুটো দোকানের মধ্যে, তাদের বাকবিতণ্ডায় কিছু ছাত্রকে জড়ানো হয়েছে বা তারা জড়িয়েছে। এই ঘটনার জেরে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকালই তারা আহত হয়েছেন। আমরা আশা করেছিলাম আজ সকাল থেকে দুইপক্ষ আলাদা থাকবে।

‘এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। তবে কিছুপক্ষ আছে যাদের দরকার অশান্তি, অস্থিতিশীলতা, অরাজকতা। তারাই যেকোনো জায়গায় ছোট কোনো ঘটনাকে নানাভাবে বড় করে দেখানোর প্রচেষ্টা চালায়।’

এর আগে (মঙ্গলবার বিকেলে) ছাত্র-ব্যবসায়ী সংঘর্ষের ঘটনা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় তিনি আজ (মঙ্গলবার) থেকেই ঢাকা কলেজে ঈদের ছুটি ঘোষণা করেন। 

মন্ত্রী বলেন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ এপ্রিল ঈদের ছুটিতে বন্ধ হলেও ঢাকা কলেজে যেহেতু ক্লাসের পরিবেশ নেই, তাই আজ থেকেই এই কলেজে ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। আগামী ৫ মে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা কলেজও খোলা হবে।

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ছাত্রদের ওপর পুলিশের অ্যাকশনের কোনো দরকার ছিল কি না, তা তদন্ত করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই তদন্ত করবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের দায়িত্ব তারাই তদন্ত করবে।

সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।

মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। অনেকে হেলমেট পরে হাতে লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয়পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

এদিকে, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহন হন নাহিদ (১৮) নামের এক কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী। মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। 

এএজে/এমএইচএস