পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। বুধবার (২৭ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। ট্রেনের শিডিউলে কিছুটা বিপর্যয় দেখা দিলেও আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল পর্যন্ত সড়কপথে তা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সারাদিনই রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুরের  কাউন্টার থেকে দূরপাল্লার গাড়িগুলো সময়মতো ছাড়ছে। আগে টিকিট কেটে রাখায় যাত্রীরা কাউন্টারে আসছেন, আর বাস ধরে চলে যাচ্ছেন।   

তবে বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে যাত্রীদের বাড়তি চাপ হবে বলে মনে করছেন যাত্রীরা। সেই সঙ্গে সড়কে বাড়বে গাড়ির সংখ্যা। এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার থেকে সড়কে যানজট, শিডিউল বিপর্যয়সহ নানা ভোগান্তির আশঙ্কা তাদের।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরাও মনে করছেন, আজ রাত থেকে মূলত যাত্রীদের চাপ শুরু হয়ে কাল সকাল থেকে তা বাড়তে থাকবে। তারা বলছেন, ১৫ এপ্রিল থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর পর থেকে অনলাইন ও কাউন্টারে ২৮ তারিখ রাত থেকে ২৯, ৩০ তারিখে বাসের টিকিটের সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল।

রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে দেশ ট্রাভেলসের বাসে পরিবারসহ নাটোর যাবেন হাবিবুর রহমান নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, আজ দুপুর পর্যন্ত অফিস করেছি, আজ ঈদের আগে শেষ অফিস ছিল। শেষ করেই দ্রুত বের হয়ে এসেছি। বিকেল ৫টার গাড়িতে আমরা নাটোর যাব। মূলত সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল, পরশু বাড়ি ফেরার মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকবে। তাই আজ বিকেলের মধ্যেই আমরা চলে যাচ্ছি।

বগুড়া যাওয়ার জন্য কল্যাণপুরের শাহ ফাতেহ আলী কাউন্টারে অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী শাহমিনা খাতুন। তিনি বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টায় আমার বাস, কিন্তু আমি বেলা ২টা থেকে কাউন্টারে আছি। কারণ অফিস থেকে সরাসরি কাউন্টারে চলে এসেছি। আড়াই ঘণ্টায় দেখলাম টিকিটের সময় অনুযায়ী সব বাসই ছেড়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এখনো বাসের শিডিউল বিপর্যয় শুরু হয়নি। তবে কাউন্টারের লোকজন বলাবলি করছে, আজ রাত থেকে আগামীকাল এবং পরশু সড়কে অতিরিক্ত যাত্রী  ও গাড়ির চাপ থাকবে। ফলে ওই সময়ে বাসের শিডিউল বিপর্যয় হতে পারে। আজ আমি ভালোভাবে পৌঁছাতে পারলেই চিন্তামুক্ত হই।

ঈদযাত্রার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় গ্রামীণ ট্রাভেলসের কল্যাণপুর কাউন্টারের সমন্বয়ক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল থেকে ঈদ যাত্রা শুরু হওয়ার পর আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাসের শিডিউল ঠিক আছে। তবে আজ রাত থেকে সড়কে অতিরিক্ত যাত্রী চাপের পাশাপাশি গাড়ির সংখ্যা বাড়তে থাকবে। ফলে যানজটসহ কিছুটা যাত্রী ভোগান্তির শঙ্কা আছে। 

তিনি বলেন, টিকিট এক সপ্তাহ আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। তারপরও আমরা সবাই কাউন্টার থেকে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আছি যেন যাত্রীদের কোনো সমস্যা না হয়।

দেশ ট্রাভেলসের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মোহম্মাদ মোস্তাক বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের সব গাড়ির শিডিউল ঠিক আছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি না হয়। আমাদের টিকিট সব আগেই বিক্রি হয়ে গেছে, যাত্রীরা ঝামেলা চান না।  ২৯, ৩০ তারিখের টিকিটের সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল। এছাড়া আজ রাত থেকেই বাড়ি ফেরা যাত্রীদের চাপ সৃষ্টি হবে। আমরা আমাদের দিক থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি। যেমন কল্যাণপুরে কোনো দূরপাল্লার বাস ঢুকছে না, ছোট পরিবহনে করে যাত্রীদের মূল বাসের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

কল্যাণপুরে হানিফ বাসের কাউন্টারের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লোকাল বাস মালিকদের লোভের কারণে ঈদের সময় সড়কে অতিরিক্ত যানজট সৃষ্টি হয়। আজ পুরো ঢাকা ঘুরে দেখবেন লোকাল বাসের সংখ্যা অনেক কম। কারণ তারা বাস ধুয়ে-মুছে রেডি করছেন। 

এএসএস/আরএইচ