প্রতীকী ছবি

বছরের ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয় এপ্রিল ও মে'কে। এপ্রিল মাস অতিবাহিত হয়েছে কোনো ঘূর্ণিঝড় ছাড়াই। তবে মে'র শুরুতেই চোখ রাঙাচ্ছে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষা ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে এ ঘূর্ণিঝড়।  

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক জানান, আগামী ৬ থেকে ৭ মে’র মধ্যে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। লঘুচাপটি তৈরি হলে সেটি পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট লঘুচাপের পর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। যার নাম হবে ‘আসানি’। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষা ও বাংলাদেশের উপকূলে চলতি মাসের ১০ থেকে ১২ মের মধ্যে আঘাত হানতে পারে।
 
আবুল কালাম মল্লিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘লঘুচাপটি আরও শক্তি অর্জন করে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। পরবর্তীতে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আন্দামান সাগরে এই লঘুচাপটির জন্ম হবে আগামী ৬ বা ৭ মে। বাংলাদেশ থেকে এর দূরত্ব হবে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার কিলোমিটার। এই লঘুচাপ পরে ঘূর্ণিঝড় হবে কি না সেটি এ মুহূর্তে বলা কঠিন।’

তিনি বলেন, ‘তবে তৈরি হতে যাওয়া লঘুচাপটি থেকে শক্তি অর্জন করে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রেডিকশন অনুযায়ী লঘুচাপটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ অভিমুখী আছে। যদি এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা ও বাংলাদেশ উপকূল বরাবর দিকটা তৈরি হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তেই এই পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ গত কয়েক বছরে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপগুলো দেখা গেছে, সেগুলো ক্ষণে ক্ষণে চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও দিক পরিবর্তন করেছে। এ জন্যই বলা যাচ্ছে না যে, এটা আদৌ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না। তবে বর্তমান তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী শক্তি অর্জন করে এটির ঘূর্ণিঝড় হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে কত কিলোমিটার বেগে উপকূলে আঘাত হানবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদি এই ঘূর্ণিঝড়টি আসে, তাহলে এর নাম হবে আসানি। বঙ্গোপসাগরে যেসব ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়েছিল। তবে এটাও সত্য যে, ঘূর্ণিঝড়গুলো উপকূলে আসতে আসতে অনেকটা দুর্বল হয়ে যায়। যেহেতু এখনো ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হয়নি, সেহেতু এর তীব্রতা এই মুহূর্তে বলার সুযোগ নেই। তবে এটি যদি তৈরি হয়, তাহলে এর তীব্রতা বেশি হবে।’

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এটি উপকূলে কবে আঘাত হানতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আসতে সপ্তাহখানেক সময় লাগে। এই লঘুচাপটি যে জায়গায় তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে বাংলাদেশ উপকূলে আসতে ১০ দিন সময় লাগবে। সুতরাং আগামী ১০ থেকে ১২ মে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তারপরও ঘূর্ণিঝড়টির দিক ও তার অগ্রসরমান গতির ওপর নির্ভর করবে কবে কোথায় এটি আঘাত হানবে।

এসআর/এসকেডি/জেএস