ঈদের ছুটি শেষে রোববার (৮ মে) থেকেই সরব হতে থাকে রাজধানী ঢাকা। তবে আজ পুরোদমে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানী। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা গেছে। অন্যদিকে অফিসগামী যাত্রীদের সকাল থেকেই বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এছাড়া গণপরিবহনের ভেতরেও যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের ছুটির দিনগুলোতে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি।

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহনের দেখা মিলেছে খুব কম। গতকাল (রোববার) থেকে আবার বেড়েছে পরিবহন চলাচল। সোমবার (৯ মে) সকাল থেকে রাজধানীর সড়কগুলোতে বাসের দাপট চলছে।

এছাড়া রোববার থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। অনেক অভিভাবক ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন, এতে রাস্তায় গড়ির চাপ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় বাসের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল, রিকশা, সিএনজি ও প্রাইভেটকারের সংখ্যাও বেড়েছে। গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তা এখন পর্যন্ত সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বেশিরভাগ সড়কে থেমে থেমে যান চলাচল করছে।

সোমবার (৯ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, পল্টন ও গুলিস্তান এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

ঢাকায় ঈদের ছুটিতে বাস চালানো কয়েকজন চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার (৭ মে) পর্যন্ত রাজধানীর রাস্তা ফাঁকা ছিল। মূলত রোববার থেকে রাস্তায় বাসের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আর সোমবার এসে তা স্বাভাবিক রূপ নেয়। তবে এই সপ্তাহে তেমন যানজট দেখা যাবে না। আগামী সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস থেকে আগের রূপে ফিরবে ঢাকা।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ঈদের পর কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় ফিরেছেন। অনেকের পরিবার এখনও গ্রামে। স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তারা ঢাকায় ফিরবেন। যার কারণে আগামী সপ্তাহ থেকে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যাবে।

রাজধানীর বিজয় নগর মোড়ে মাওয়া থেকে আব্দুল্লাপুরগামী প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাসের চালক মো. শাহিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, মাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে আজ পর্যন্ত প্রচুর ঢাকা ফেরত যাত্রীর চাপ ছিল। বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার রাস্তা ফাঁকা থাকলেও গতকাল ও আজ থেকে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি। অনেক জায়গায় যানজটে গাড়ি নিয়ে আটকে থাকতে হয়েছে।

পল্টন মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ সিএনজি অটোরিকশার চালক মিনহাজ মিয়া বলেন, ঈদের ছুটিতে যে রাস্তায় ২০ মিনিটে যাওয়া যেত, গতকাল থেকে সেখানে ১ ঘণ্টা সময় লাগছে। তবে এখনও রাস্তায় তেমন যানজট শুরু হয়নি। আগামী রোববার থেকে এই রাস্তায় যানজট আরও বাড়বে।

আজিমপুর থেকে মিরপুর-১০ নম্বরে যাবেন অনিক খান। তিনি বলেন, টিকিট না পাওয়ার কারণে ঢাকায় ঈদ করেছি। ছুটি নিয়ে আজ বাড়ি যাচ্ছি। ঈদের ছুটিতে ঢাকায় চলাচল করতে অনেক ভালো লেগেছে, রাস্তা অনেক ফাঁকা ছিল। এখন গাবতলী বাস টার্মিনালে যাচ্ছি। নিউমার্কেট এলাকা পার হতে অনেক সময় লাগছে। ঢাকায় আবার যানজট শুরু হয়ে গেছে।

এদিকে ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকার পর আবারও খুলতে শুরু হয়েছে রাজধানীর শপিংমলগুলো। শপিংমলে ক্রেতাদের তেমন ভিড় না থাকলেও মানুষের আনাগোনা আছে। বিক্রেতারা বলছেন, এই মাসে বিপণিবিতানগুলোতে তেমন ক্রেতা থাকবে না। কারণ ঈদে প্রায় সবাই শপিং করেছে। আগামী মাসের শুরু থেকে ক্রেতার সংখ্যা আবার বাড়তে থাকবে বলে আশা তাদের।

জানতে চাইলে কাকরাইল মোড়ে দায়িত্বরত সার্জেন্ট আরিফ বলেন, গতকাল (রোববার) থেকে অফিস খুলেছে, তাই রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। আজ রাস্তায় ভালোই গাড়ির চাপ আছে। আগামী কয়েকদিনে আরও গাড়ি নামবে সড়কে।

এমএসি/এসএসএইচ/জেএস