ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সবাই সচেতন না হলে সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে করা কঠিন কাজ। তাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকাবাসীর সচেতনতা এবং সহযোগিতা চাই।

সোমবার (১৬ মে) বিকেলে নগরভবনের সভাকক্ষে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সহযোগিতা চান।

মেয়র তাপস বলেন, আমরা সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হয়ে 'নিয়মিত প্রতিদিন জমা পানি ফেলে দিন' এটি মেনে চলে তাহলে বিশ্বাস করি ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব হবে না। আমরা নিজেদের দিক থেকেও আমাদের কার্যক্রম আরও অনেক গতিশীল করেছি। এরসঙ্গে নগরবাসীও যদি একটু সচেতন হয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন তাহলে আমরা ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারব। কারণ কার বাড়ির ছাদে, বাগানে, পরিত্যক্ত পাত্রে এডিস বংশ বিস্তার করছে তা আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বুঝতে পারব না, পদক্ষেপেও নিতে পারব না। তাই নগরবাসী নিজেরা যদি সচেতন হয় তাহলে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব অনেক কমে যাবে।

একটি উদাহরণ টেনে মেয়র তাপস বলেন, যে দেশে ঠান্ডা, প্রচুর স্নো পড়ে সেসব দেশের নাগরিকরা নিজ বাড়ির স্নোগুলো নিজেরাই পরিষ্কার করেন। সিটি করপোরেশন সেখানে রাস্তার স্নো সরিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়। আমাদের ক্ষেত্রেও নিজ বাড়ির এডিসের লার্ভা বিষয়ে যদি আমরা নিজেরা সচেতন না হই, তাহলে সিটি করপোরেশন একা এডিস নির্মূল করতে পারবে না।

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, কয়েকটি ছোট ছোট উদ্যোগ নিলে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব অনেকাংশেই কমে যাবে। যেহেতু কাউন্সিলররা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাই তারা সব বাড়ি এলাকা, ভালোভাবে চেনেন। আপনারা এলাকায় সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলুন। এসিড মশার লার্ভা থাকতে পারে এমন বাড়ি বাড়ি আপনারা কমিটি নিয়ে যান। যদি লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে প্রথমে হলুদ কালারের স্টিকার লাগিয়ে সতর্ক করে আসুন। পরের বার গিয়েও যদি লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে লাল স্টিকার লাগিয়ে সিটি করপোরসশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এভাবে এলাকভিত্তিক এডিসের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা সম্ভব।

রাজধানীতে একটি নির্মাণাধীন বাড়ি, ভবন দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলে এই স্থানগুলোতে মশা বংশবিস্তার করে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, কতদিনে একটা ভবন নির্মাণ শেষ করতে হবে তার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে হবে রাজউককে। এছাড়া ওয়াসার যে মিটার রয়েছে এগুলোতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে ওয়াসাকে। অনেক এলাকায় নিরিবচ্ছিন্নভাবে ওয়াসার পানি সরবরাহ পায় না। ফলে ওইসব এলাকাবাসী পানি ধরে রাখেন বিভিন্ন পাত্রে। এতে করেও এডিসের ঝুঁকি বাড়ে। তাই ওয়াসাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরসহ কাউন্সিলর, অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/জেডএস