আমরা সংসদকে ধূমপানবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সামনে বাজেট সেশন আসছে, সেখানে আমরা অন্তত ১ মিনিট হলেও তামাকের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে বলে জানিয়েছেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) কক্সবাজারের সি পার্ল রিসোর্টে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং আয়োজিত ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।

৩ দিনব্যাপী এই সম্মেলনে জাতীয় সংসদের ৩২ জন সংসদ সদস্য, সরকারের বিভিন্ন সেক্টরের ৫ জন সরকারি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, আমরা তামাকের বিরুদ্ধে যেসব কমিটমেন্টগুলো করছি, সেগুলোকে আরও দৃঢ় করতে হবে। এখানে আজ যে ৪০ জন এমপি আছেন, তাদের কেউ বলেন নাই ধূমপান ভালো, তামাক ভালো। এগুলো আমাদেরকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে পারব।

গ্লোবাল ট্যোবাকো এটলাসের গবেষণা তথ্য তুলে ধরে আরমা দত্ত বলেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক যে একজন রোগী যখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে যান, তখন তিনি পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। কারণ, আমাদের ১২.৭ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য সেবাদান কেন্দ্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়ে অসুস্থ হচ্ছেন। এর বাইরেও ৪২.৭ শতাংশ আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্রে, ৪৯.৭ শতাংশ রেস্তোরাঁয়, ৮.২ শতাংশ স্কুলে, ৩৯ শতাংশ বাড়িতে এবং ৪৪ শতাংশ গণপরিবহণে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। এটা খুবই হতাশাজনক। আমাদের এই ব্যাপারগুলো থেকে বের হয়ে আসার অন্যতম উপায় হতে পারে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এগুলো অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে।’

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘হিটেড ট্যোবাকোর পক্ষে ফেসবুসহ বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় ই-সিগারেটের প্রচার ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অনলাইন মার্কেটে অর্ডার দিলে এখন এসব পণ্যে ঘরে এসে দিয়ে যায়। কিন্তু ই-সিগারেট যে তামাকের সিগারেটের মতো ক্ষতি করে, তা অনেকেই জানে না। কিন্তু এটাই সত্যি যে, এটি সমানভাবে ক্ষতি করে। আমার মনে হয় এখনই সময় যে ই-সিগারেটকে নিয়ন্ত্রণ করে আইনের অধীনে নিয়ে আসা। কারণ, এখন থেকেই যদি এটকে কার্যকরীভাবে বন্ধ করা না হয়, তাহলে আগামীর প্রজন্মকে তামাকের ব্যবহার থেকে বের করে নিয়ে আসা কঠিন হবে।’

উল্লেখ্য, আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এই কনফারেন্সটি আয়োজন করেছে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’। সার্বিক সহায়তায় রয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এবং ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডস বাংলাদেশ।

এমএইচএন/আইএসএইচ