চাঁদপুর সদর থানার দক্ষিণ বালিয়া এলাকায় কোহিনুর বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী আলমগীর শেখের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (২০ মে) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান কোহিনুর। পরে শনিবার (২১ মে) দুপুরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায় শাহবাগ থানা পুলিশ।

কোহিনুর বেগমকে হত্যার অভিযোগ করে তার চাচাতো ভাই মনির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আমার বোনকে খুব ভালো করে চিনি। তিনি একজন পর্দানশীল নারী। আমার বোনকে তার স্বামী বিষ খাইয়েছে অথবা তাকে এমনভাবে মানসিক নির্যাতন করেছে যে কারণে তিনি গভীর রাতে বিষপানে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। তার ৫ ও ৬ বছরের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহত কোহিনুরের ছোট ভাই মমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বোনের এর আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। পরে সেখান থেকে ছাড়াছাড়ি হলে আলমগীর শেখের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিভিন্ন সময়ে তিনি বোনকে নির্যাতন করতেন। এটা নিয়ে কয়েকবার পারিবারিকভাবে বসে মীমাংসা করা হয়। আলমগীর শেখ জানায়, রাতে পানি পিপাসা লাগলে আমার বোন ধানের পোকা মারা ওষুধ পানি মনে করে খেয়ে ফেলেন। কিন্তু তার পিপাসা লাগলে ফ্রিজ থেকে কিংবা কলস নইলে জগ থেকে পানি পান করার কথা। তিনি কি ছোট মানুষ? যে টাইগারের বোতলে পানি মনে করে বিষ খেয়ে ফেলবেন।

মমিনুল আরও বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে বোনের বাসায় আসি। এসে দেখি তিনি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তার মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। পরে তাকে রাতেই চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে পাকস্থলী ওয়াশের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে গতকাল (শুক্রবার) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০১ নম্বর ওয়ার্ডে আমার বোন মারা যায়। বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার বোনের মৃত্যু সঠিক বিচার চাই।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে কোহিনুরের স্বামী আলমগীর শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করি। বুধবার দিবাগত রাত্রে আমার স্ত্রী পানির পিপাসা লাগলে ধানের পোকা মারার ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে আমরা তার পরিবারকে খবর দেই। এরপর তার ভাইসহ চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে চাঁদপুর থেকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। এরপর ঢাকা মেডিকেলে ৮০১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকেরা অভিযোগ করছেন যে আমি তাকে বিষপান করিয়ে হত্যা করেছি। আমার স্ত্রীর মরদেহ ময়নাতদন্ত হয়েছে। যদি এমন কোনো সত্যতা পায় তাহলে আমি অপরাধী। এখন মরদেহ নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা করেছি।

এসএএ/ওএফ