জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশ আজ যোজন দূরে দাঁড়িয়ে আছে। অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেই প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। মানব চেতনার উন্নয়ন ঘটিয়ে উন্নয়নকে টেকসই করতে হবে। 

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২১ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : প্রসঙ্গ চুকনগর গণহত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক সভায় সভাপতিত্ব করেন। 

ড. মিজানুর রহমান বলেন, সমাজে যে গলদ দেখা দিয়েছে, তাকে অবজ্ঞা করার বা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার আজ আর কোনো অবকাশ নেই। গলদের অবসানে সরকার, রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধকালে খুলনার চুকনগরসহ সারাদেশের নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ও তাদের দোসরদের সংঘটিত গণহত্যার কথা উল্লেখ করে ড. রহমান বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে এ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে মুক্তিযুদ্ধপ্রেমী সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, সরকারকে সহায়তা দান এবং একই সাথে সতর্ক করার জন্যে দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীরা যারা নানানভাবে পরামর্শ দেন। তাদের প্রতি রাজনীতিকদের একাংশের অবজ্ঞা ও উপেক্ষা তাদের হতাশ করে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ১ কোটি ২০ লাখ বাঙালির শরণার্থী জীবনের দুঃসহ পরিস্থিতি আত্মোৎসর্গকারী এমনকি মুজিবনগর সরকারের নেতারাও আজ উপেক্ষার শিকার। পাঠ্যপুস্তক হেফাজতের দখলে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে মুক্তিযুদ্ধকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকে হত্যা করা যাবে না। 

বিশেষ অতিথির ভাষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন প্রতিদিনের ঘটনা। চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির একটিও বাংলাদেশে নেই। বড় পাকিস্তান ভেঙে ছোট পাকিস্তান গড়ার জন্যে আমরা কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? আফগানিস্তান বাংলাদেশের দিকে শ্বাস ফেলছে। 

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী রেখা চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে রেখে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন সম্ভব নয়। ৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া ছাড়া আজ আর কোনো বিকল্প নেই।

এসএইচআর/আরএইচ