নিজ কোম্পানিতে শেয়ার দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের প্রধান ও নয় মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মোহাম্মদ আব্দুল হককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। রোববার (২২ মে) রাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের প্রধান ফটকের সামনের সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব বলছে, আবদুল হক ট্রিম ইন্ড্রাস্টিজ নামে ছোট একটি গার্মেন্টস এক্সোসরিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে বলে দাবি করেছেন। তবে এ নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের হদিস পাওয়া যায়নি।

সোমবার (২৩ মে) র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত প্রতারক আব্দুল হক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে তার কোম্পানিতে চাকরি এবং শেয়ার দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেন। পরে তাদের কোম্পানির শেয়ারের টাকার লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক প্রদান করত। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা চেক নিয়ে ব্যাংকে গেলে দেখা যেত তার দেওয়া চেকের বিপরীতে অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। এভাবে তিনি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।

তিনি বলেন, তাকে যেন ভুক্তভোগী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহজে খুঁজে না পায় সেজন্য তিনি হালিশহরের নিজ বাড়িতে অবস্থান না করে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বন্ধুদের বাসায় অবস্থান করতেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় মোহাম্মদ আব্দুল হক ঢাকার গুলশান ও বনানী এলাকার বিভিন্ন অভিজাত হোটেল ও বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করতেন। এছাড়া তিনি একাধিক মোবাইলে ঘন ঘন সিম পরিবর্তন করে ব্যবহার করতেন যাতে তার সঙ্গে কেউ সহজে যোগাযোগ করতে না পারে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ব্যাপক নজরদারি অব্যাহত রাখে র‍্যাব। তারই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা থেকে রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম ও অন্যান্য কার্ড, বিদেশি ডানহিল সিগারেট, চেক বই, আইপ্যাড ট্যাব, বিভিন্ন ব্রান্ডের হাতঘড়ি, আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল জব্দ করে।

তিনি বলেন, আব্দুল হক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণা করে কোটি টাকা আত্মসাত করেছে বলে স্বীকার করেছে। তার স্বীকারোক্তি মতে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভুক্তভোগী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ১৫টি চেক জাল-জালিয়াতির মামলা করেছেন।

র‍্যাব জানায়, আসামির বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চেক জালিয়াতির ১৫টি মামলা পাওয়া গেছে। যার মধ্যে আসামির বিরুদ্ধে ৯টি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে তাকে সাজা ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি মামলাগুলো বিচারাধীন রয়েছে।

কেএম/এসএসএইচ