নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর /ফাইল ছবি

প্রার্থী-ভোটারদের নিরাপত্তা ও প্রচারের সুযোগ করে দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, দায়িত্ব পালনে কারও অবহেলা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। নির্বাচনের দিন ভোটারদের আসতে বাধা দিলে সেই ভোট বাতিল করে দেব। যারা বুদ্ধিমান ও সচেতন তারা এগুলো করবে না বলেই আমরা মনে করি।

মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা ১১টায় সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়ার দুই ইউনিয়নের একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা ইসি ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

যারা পেশিশক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করছেন তাদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে মো. আলমগীর বলেন, পেশিশক্তি ব্যবহার করে কেউ যদি নির্বাচিত হবার স্বপ্নে দেখে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় প্রশাসনের কারও অবহেলা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে যদি অন্য প্রার্থীকে বাধা দেওয়ার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। পেশিশক্তি ব্যবহার করে বিজয়ী হব, জনগণের সেবা করব এইটা যদি কেউ মনে করে থাকেন- তাহলে অত্যন্ত ভুল করছেন। কারণ এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না।

এর আগে, স্থানীয় সংসদ সদস্য (নোয়াখালী-৬) আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী মোহাম্মদ আলীর লোকদের অত্যাচারে ভোটের প্রচার চালাতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও তারা কোনো প্রতিকার পাননি- এসব কারণে কাফনের কাপড় পরে ও বিষ নিয়ে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ দাবি করে ইসি সামনে অবস্থান নেন প্রার্থীসহ প্রতিনিধিরা। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, এটা আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে প্রথম শুনলাম। আর আমরা কর্মকর্তা পাঠিয়েছিলাম তারাও বলল। আমরা তাদের বলেছি, উনাদের যদি কেউ থাকে তাহলে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসেন।

ভোটে যদি কেউ বাধা দেয় তাহলে ইসির ভূমিকা কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাধা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। যেকোনো উৎস থেকে যদি তথ্য পাই যে প্রার্থীদের বাধা দেওয়া হয়েছে, ভোটারকে বাধা দেওয়া হয়েছে অথবা নমিনেশন পেপার সাবমিট করতে দেওয়া হয়নি- তাহলে প্রথমে আমরা যেটা করি শিডিউলটাকে আমরা স্থগিত করে দেই। যাতে অন্য কোনো প্রার্থী যদি থাকে তাহলে সে যেন পুনরায় আবার নমিনেশন দিতে পারে। যদি এমন হয় ওইখানে প্রার্থী নিরাপদ নয় তাহলে পার্শ্ববর্তী জেলা বা উপজেলায় তাদের নমিনেশন সাবমিট করার সুযোগ দেই।

হাতিয়ার দুই ইউপি প্রার্থীদের দাবি করেছিলেন যে, সেখানকার প্রশাসনকে জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ওই এলাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সার্কেল এসপিকে প্রত্যাহারসহ সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

এ প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেছেন, প্রত্যাহার তো সমাধান না। এখানে কার দায়িত্বহীনতা আছে সেটা দেখব। একটা জিনিস বুঝতে হবে প্রশাসনে যারা থাকে তাদের সময় খুবই অল্প। এটা যদি প্রশাসনের নাকের ডগায় হয় তাহলে এক জিনিস, আর যদি হয় দূরে তাহলে আরেক জিনিস। এমন একটা সময় ঘটনা হয়েছে যেখানে প্রশাসন দূরে ছিল। পরবর্তীতে দেখা গেল নমিনেশন পেপার সাবমিটের টাইম শেষ হয়ে গেছে। তখন তো আর প্রশাসনের করার কিছুই থাকছে না। সামনে কিছু ঘটলেও প্রশাসন সেখানে যদি নিশ্চুপ থাকে তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভোটে কেউ বাধা দিলে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা হবে। আপনারা দেখবেন তার প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে কি না। কেউ যদি পেশিশক্তি প্রয়োগ করে তাহলে ইসি তার ক্ষমতাবলে মামলা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেবে। প্রয়োজনে ভোট বাতিল বা অভিযুক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করবে।

এসআর/ওএফ