মেধাবীদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, জীবনে ভুল করেও তোমরা কখনো মাদকের সঙ্গে জড়িত হবে না। কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তি জীবনে সফল হয়েছে, এমন একটি নজির নেই। মাদকাসক্ত হয়ে মা-বাবার স্বপ্নকে ধ্বংস করা যাবে না। কোনোভাবেই মাদক গ্রহণের মতো পাপের রাস্তায় পা বাড়ানো যাবে না।

শনিবার (৪ জুন) দুপুরে রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে’ বঙ্গবন্ধুর এ বাণীকে প্রতিপাদ্য হিসেবে ধারণ করে ডিএমপি পরিবারের মেধাবী সন্তানদের অনুপ্রেরণা জোগাতে শিক্ষাবৃত্তি-২০২১ প্রদান করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। অনুষ্ঠানে ৭৮৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। 

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেধাবীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন ডিএমপি কমিশনার। এইচএসসি, এসএসসি, ও-লেভেল, উচ্চ শিক্ষা ক্যাটাগরিতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়।  

বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতিকে যদি উন্নত করতে হয়, তবে শিক্ষা ছাড়া উপায় নেই। আমরা যে অবস্থায় আছি, তার চেয়ে একটু ভালো অবস্থানে আমাদের সন্তানদের দেখতে চাই। আর এর জন্য তাদের সুশিক্ষিত করার কোনো বিকল্প নেই।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কমিশনার বলেন, তোমাদের আজকের এ সফলতা জীবনের একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ। তবে প্রতিটি পদক্ষেপে সফল হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কেউ তোমাকে তার অবস্থান ছেড়ে দেবে না। তোমাকেই তোমার অবস্থান অর্জন করে নিতে হবে। জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে জ্ঞানের ঘাটতি নিয়ে সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বাবাকে বাবা হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে, তার পদমর্যাদার হিসেবে নয়। প্রত্যেক মা-বাবা তার সন্তানকে মানুষ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকেন। সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। সন্তান যেন মানুষ হয় সে চেষ্টায় বাবা-মায়েরা কঠোর পরিশ্রম করেন।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিরোধে প্রথম বুলেটটি নিক্ষেপ করা হয় পুণ্যভূমি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে। একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে রাজারবাগ এলে গর্বে আমার বুক ভরে যায়। আমি এর জন্য খুবই গর্ববোধ করি।

শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বের বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পুলিশ ইউনিট। এখানে প্রায় ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। এ ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের সুশিক্ষায় উৎসাহিত করার লক্ষে ২০১৭ সালে চালু হয় শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রম। এ শিক্ষাবৃত্তি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য এ বৃত্তি মেধাবীদের উদ্বুদ্ধ করবে। বৃত্তিপ্রাপ্তরা ভবিষ্যৎ জীবনে দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠলে সেটাই হবে আমাদের সফলতা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কশিনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান,  অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনাররাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/আরএইচ