সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকেও বারবার বিষয়টি বলা হচ্ছিল। কারণ মালিকপক্ষ ছাড়া বলা যাচ্ছে না, কোন কনটেইনারে কেমিক্যাল বা কী ধরনের পণ্য রয়েছে।

তবে রোববার বেলা সাড়ে ১২টার পর বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকপক্ষের প্রতিনিধি কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক শহীদ উদ্দিন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন।

মালিকপক্ষের প্রতিনিধি শহীদ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও হতাহতের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এ মুহূর্তে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহত হয়েছেন যারা তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’ 

যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে সর্বোচ্চ এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরও সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করা হবে— জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব গ্রহণের ঘোষণা দিচ্ছি। আমাদের কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছে। 

তবে এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা বা কোনো প্রতিপক্ষ দ্বারা ইচ্ছাকৃত অনিষ্টসাধন (স্যাবোটাজ) ঘটিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

জানা যায়, স্মার্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী (দুপুর ১টা), আগুনে পাঁচ ফায়ার ফাইটারসহ ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এর মধ্যে বেশির ভাগই (১৮৫ জন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি। অন্যরা নগরীর পার্ক ভিউ হাসপাতালসহ অন্যান্য ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত এবং দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অগ্নিকাণ্ডের সময় অন্তত ২০০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।

কেএম/এসএম