চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুন রোববার রাত ১০টার মধ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী।

বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের কাছে এ আশা প্রকাশ করেন।

মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন বলেন, আগুন যতক্ষণ নিয়ন্ত্রণে আসবে না, ততক্ষণ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। ইতোমধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। আশা করা যায়, রাত ১০টার মধ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে।

জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল এখান থেকে কেমিক্যাল বয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে গেলে চরম ঝুঁকি হবে পরিবেশের জন্য। সে কারণে আমরা দুটি ড্রেনের মুখে বাঁধ দিয়েছি, যেগুলো খালের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। নালাগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এতে কেমিক্যাল বঙ্গোপসাগরে এখন আর পড়তে পারবে না। আর বাকিটা পরিবেশবিদরা বলতে পারবেন।  

এদিকে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, কনটেইনার থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভাতে পানি ছিটাচ্ছেন। এরপরও নিভছে না আগুন।

আগুনের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই শতাধিক মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। এখন ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। রোববার সকালে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর একটি দল। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপো ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় অন্তত ২০০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি।

ওএফ