সীতাকুণ্ডের অগ্নি দুর্ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ।

শিশু অধিকার সুরক্ষায় এবং টেকসই উন্নয়নে কাজ করা ছয়টি সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্মটি দাবি করেছে, মর্মান্তিক এ ঘটনায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বহন করতে হবে। শিশুরা এর ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ দুর্ঘটনায় আহতদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিশু ও যুবদের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।

জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশের পক্ষে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ পরিচালক (গার্লস রাইটস) কাশফিয়া ফিরোজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দুইশতাধিক মানুষ আহত ও দগ্ধ হয়েছেন। ৯ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ এখন পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হয়েছেন।

এছাড়াও সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অনেকে। জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ এ ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ডিপোর এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসেনি। থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছিল। ঘটনার পর আগুন ও ছড়িয়ে পড়া বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে। গণমাধ্যমের তথ্য মতে  নিহত ও আহতদের মধ্যে ১৭- ২৪ বছর বয়সীরাও রয়েছেন।

মৃতদেহগুলো মারাত্মকভাবে আগুনে পুড়ে যাওয়ায় সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। প্রাপ্তবয়স্ক অনেকের মৃত্যুও খবর পাওয়া গেছে, যাদের পরিবারে রয়েছে শিশু সন্তান। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে হতাহতদের পরিবারের শিশুরাও।

জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ ঘটনাস্থলে উদ্ধার ও আহতদের চিকিৎসা সেবায় যারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের প্রতি সম্মান জানাচ্ছে। পাশাপাশি নিহতদের সন্তানদের জন্য গভীর উদ্বেগ ও সমবেদনা প্রকাশ করছে।

গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ বলে, আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উপরন্তু ডিপোতে থাকা আরও চারটি কন্টেইনারে রাসায়নিক রয়েছে বলে জানানো হয়েছে সেনাবাহিনীর ব্রিফিংয়ে। সোনাইছড়ি উপজেলা পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত কিনা তা এখনো একেবারেই অনিশ্চিত।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে, এই রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রভাব আশপাশের এলাকার পরিবেশে দীর্ঘকাল থাকবে। যা শিশুসহ সেখানে বসবাসকারী মানুষদের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।

জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ মনে করে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার সুদূরপ্রসারী প্রভাব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বহন করতে হবে। শিশুরা এর ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, আহতদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিশু ও যুবদের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করা ও বর্তমানে আরো যেসব কনটেইনার ডিপো রয়েছ, সেগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য দাবি জানায় জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ।

জয়েনিং ফোর্সেস বাংলাদেশ ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম। এটি ২০১৮ সাল থেকে শিশু অধিকার সুরক্ষায় এবং টেকসই উন্নয়নে কাজ করছে। এর সদস্য সংস্থাগুলো হচ্ছে- প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, এডুকো বাংলাদেশ, এস ও এস চিলড্রেন ভিলেজ বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, টেরে ডেস হোম নেদারল্যান্ডস।

জেইউ/এমএইচএস