মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১০ জুন) বিকেল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষার এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

সমাবেশ থেকে সংগঠনের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষার সব শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে বলেন, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এ দেশ পেলাম তাদের সন্তান ও প্রজন্মদের মেথর, কেরানি ও ঝাড়ুদার বানানোর জন্য চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা রেখে ১ম, ২য় এবং ৩য় শ্রেণির অর্ধেক কোটা বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন কোটা থাকলে নেই শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা। শুধু তাই নয় ১৪তম ও ২০তম গ্রেডে মেথর আর কেরানি বানানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হলেও এ চাকরিগুলোতে একাধিক ভাইবা দিলেও চাকরি পাচ্ছে না বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা। কারণ ১৪-২০তম গ্রেডের চাকরিগুলোতে নিজ নিজ বিভাগ পরীক্ষা নেওয়ার কারণে সেখানে ব্যাপক স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি হয়। সেজন্য এখানে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মদের কৌশলে ভাইবায় বাদ দেওয়া হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গাফফার কুতুবী বলেন, দ্রুত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন দেওয়া দরকার। কারণ নির্বাচন না হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নেওয়া প্রায় ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকার ৪৭০টি কমপ্লেক্সের মধ্যে ৪০৬টি সম্পূর্ণ হলেও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ না থাকায় কমপ্লেক্স গুলো বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে নির্মিত ৪০৬টি কমপ্লেক্স পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধাদের বীর উপাধি দিয়েছে কিন্তু কোটা সংস্কারের নামে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মদের শ্রেণি বিন্যাস করে চতুর্থ শ্রেণির মর্যাদা বা নাগরিকত্ব দেওয়ার কৌশল অবলম্বন করছে। যা সম্পূর্ণরূপে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অপমান অপদস্থ করার সামিল। এছাড়াও রাষ্ট্র তাদের বীর উপাধি দিলেও তাদের সম্মানী ভাতা হয় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা থেকে। অর্থাৎ প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক ভাতার সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এক করেছে যা বীর শব্দকে চরমভাবে অপমান অপদস্থ করার সামিল।

বক্তারা বলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪ সালে, তিন বছর পর পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও গত ৮ বছর ধরে কোনো নির্বাচন হয়না। নির্বাচন না হওয়ার কারণে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চলছে।

এতে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান রনি, নাছির আহমেদ পলাশ, মনিরুজ্জামান মাশুদ মাহমুদ, রোকসানা নাজনীন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, এস এম তোফায়েল আহমেদ, শিবলি ফোরকান, এস.এম মাহবুব, মাসুদ খান, গোলাম কিবরিয়া, মিঠু, অর্থ সম্পাদক মাহমুদা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক এহসানুল আবেদীন।

সমাবেশে বিভিন্ন জেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনের নেতারা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ও মুক্তিযোদ্ধা কোটার পুনর্বহালের দাবিসহ বিভিন্ন দাবি জানান।

এআর/আইএসএইচ