বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডে স’মিলের মালামাল ও মেশিন পুড়ে যায়

রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুল রোডের তিনটি স’মিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি স’মিল পুরো পুড়ে ছাই হয়েছে। বাকি দুটি স’মিল আংশিক পুড়ে গেছে। আগুনে পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া মামুন স’মিলের ১০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। আর বাকি দুটি স’মিলের ৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের চারটি ইউনিট প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ক্ষতিগ্রস্ত স’মিল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ কথা জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া তিনটি স’মিলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মামুন স’মিল। মিলটির ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে থাকা সব মালামাল ও কাঠ কাটার সব মেশিন পুড়ে ছাই হয়েছে। এমনকি স’মিলটি টিনের চালও পুড়ে গেছে। স’মিলটিতে কোনো কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।

ক্ষতিগ্রস্ত বাকি দুই স’মিলের মধ্যে একটির নাম জেসমিন ফার্নিচার। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কাঠ কাটার বা সাইজ করার যে জায়গাটি রয়েছে সেই জায়গাটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। মিলের অন্য অংশে আগুন ছড়ানোর আগেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল।

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জেসমিন ফার্নিচারের ম্যানেজার সাইদুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত ৯টার দিকে আমরা কাজ শেষ করে বাসায় চলে যাই। এ সময় আমাদের কারখানায় কোনো কর্মচারী থাকে না। পরে রাত ১২টার দিকে ফোনে জানতে পারি কারখানায় আগুন লেগেছে। ঘটনাস্থলে এসে দেখি মূল আগুন মামুন স’মিলে লেগেছে। সেখান থেকে আগুন আমাদের কারখানা ও অন্য আরেকটি কারখানায় ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, মামুন স’মিলটিতে আমাদের কারখানার মতোই মালামাল রয়েছে। সে হিসেব করলে তাদের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আর আমাদের কারখানার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩ লাখ ও অন্যটির ২ লাখ।

এদিকে আগুন লাগার পর থেকে মামুন স’মিলের মালিক ও কর্মচারী  উধাও। তারা কারখানায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মামুন স’মিলের অ্যাডজাস্ট ফ্যান বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এরপর আগুন চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. জামিল বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাকি দুইটি মিলের কাজ রাত ৯টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মামুন স’মিলের কাজ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। তাদের অসতর্কতার কারণেই রাতে এ আগুনের লাগার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস যদি সময় মতো এসে আগুন না নেভাতো তাহলে আশপাশের সব ঘর-বাড়ি পুড়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারতো। আর এখন এলাকাবাসীর ভয়ে পালিয়েছে তারা।

আবাসিক এলাকার ভেতরে এ ধরনের কারখানার বিরোধিতা করে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা একরাম বলেন, সাঁতারকুল রোডে যতগুলা স’মিল রয়েছে তার সবগুলোই রাস্তার পাশে। কিন্তু এখানে তিনটি স’মিল একদম আবাসিক এলাকার ভেতরে। টিনশেডের স’মিলগুলো আবাসিক ভবনের গা-ঘেঁষা। আর এসব স’মিলে যে পরিমাণ কাঠ থাকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে মুহূর্তেই পুরো এলাকা পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। গতকালই আশেপাশের সব ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। আমরা চাই এ আবাসিক এলাকার ভেতরে থেকে স’মিলগুলো সরিয়ে রাস্তার পাশে নিয়ে যাওয়া হোক।

এমএসি/এসএসএইচ