জেলা প্রশাসকদের নয় নিজস্ব জনবলকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে বললেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। অন্যদিকে সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেছেন, ডাকাত সরাতে পারলে দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব হবে।  

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) রোববার (১২ জুন) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক ইসি সচিবদের সঙ্গে সংলাপে তারা এসব কথা বলেন। কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় সংলাপ শুরু হয়।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। সবার আগে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার। আগামী জাতীয় নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা না করে নিজস্ব জনবল দিয়ে করতে হবে। ইভিএম বা ভোট কেন্দ্রের পাহারা দেওয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বসতে হবে। সংবিধান সংশোধন না হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা যাবে না।

সাবেক কমিশনার আবু হাফিজ বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের আচরণ দেখতে হবে। খুবই কঠোর হতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ইনভলভ হওয়া যাবে না। এটা সরকারি দলের কাছে ছেড়ে দিতে হবে। আইন প্রয়োগ সঠিকভাবে করতে হবে। তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব। আমরা সঠিকভাবে নির্বাচন করলেও মানুষ মনে করেছে সুষ্ঠু হয়নি। এটা আমাদের ব্যর্থতা।

সাবেক কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, ব্যালট পেপারেও তো সিল মারা যায়। এজন্য ইভিএমের দোষারোপ করে লাভ নেই। আরেকটা বিষয় নির্বাচন কমিশন ডাকাত দাঁড়িয়ে থাকার যে কথাটি বলেছেন এটা আসলে সত্যি। এই বিষয়টি শক্তভাবে দেখতে হবে। ডাকাত সরাতে পারলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।

আউয়াল কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই গত ১৩ ও ২২ মার্চ এবং ৬ ও ১৮ এপ্রিল যথাক্রমে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি। এতে দলীয় প্রভাবমুক্ত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, সুষ্ঠু ভোটের নিরাপত্তা, ইভিএম ব্যবহারে আরও সময় নেওয়া, বিভাগভিত্তিক একাধিক দিনে ভোটের আয়োজন, নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ ইত্যাদি সুপারিশ আসে। কমিশন সেসব বিষয় আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে বিচার বিশ্লেষণ করে নিজেদের অবস্থানও জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আরও সময় নিয়ে সবার মতামতের ভিত্তিতে তারা ভোটের আয়োজনে যাবেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে আগের ছয় মাসের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

এর আগে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আউয়াল কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। নিয়োগ পাওয়ার পরদিন শপথ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম অফিস করেন নতুন কমিশন। দায়িত্ব নিয়েই তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপের সিদ্ধান্ত নেন।

এসআর/ওএফ