চসিক মেয়রের বাড়িতে আবারও হাঁটু পানি, সভা স্থগিত
টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিমের বহদ্দারহাটের বাড়ি ও বাড়ির সামনের জায়গায় হাঁটু পানি জমে। পানি জমে বাড়ির সামনের সড়কেও। এতে সোমবার (২০ জুন) সকাল থেকে বাসা থেকে বের হননি মেয়র। তবে দুপুর দেড়টার দিকে মেয়র টাইগার পাস অফিসে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।
চট্টগ্রামে নগরীতে সকাল নয়টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে নগরীর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে আছে। নগরীর বিভিন্ন জায়গায় পানি ওঠায় বিভিন্ন স্কুল থেকে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের আসতে সমস্যা হওয়ায় সিটি করপোরেশন পরিচালিত আজকের স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভা স্থগিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত শুক্রবার রাত থেকে নগরীর বহদ্দারহাটের মেয়রের বাড়িতে পানি ওঠে। শনিবার সারাদিন পানি ছিল মেয়রের বাড়িতে। রোববার রাত থেকে বৃষ্টি হওয়ায় আবারও পানি উঠেছে মেয়রের বাড়িতে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরীর বহদ্দারহাটের বহদ্দারবাড়ি এলাকার প্রবেশমুখেই মেয়রের দুইতলার বাড়ি। সামনের সড়ক থেকে বাড়ির উঠান পর্যন্ত হাঁটু সমান পানি (এ রিপোর্ট লেখার সময়ও পানি ছিল)। সেই পানি প্রবেশ করেছে মেয়রের বাড়ির নিচতলার শয়নকক্ষে। তবে পানির কারণে এখন মেয়র দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বাড়ির দুই নিরাপত্তাকর্মী।
মেয়রের বাড়ির সামনে মোহাম্মদ তানভীর নামে একজন বলেন, বহদ্দারবাড়ির আশপাশের নালাও বড় করা হয়। কিন্তু এরপরও পানি থেকে আমাদের রক্ষা মিলল না। দুই দিন ধরে মেয়রের বাড়ির মতো আমাদের বাড়ির ভেতরে হাঁটুর ওপর পানি।
শুধু মেয়রের বাড়ি নয়, সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের বাদুরতলা, বাকলিয়া, চান্দগাঁওসহ অনেক নিচু এলাকায় পানি জমেছে।
মেয়ের বাড়ির পানি ও চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা সম্পর্কে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেয়রের বাসাসহ চট্টগ্রাম নগরীর পুরো এলাকাতেই পানি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা থাকবেই। শেষ হলে প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে। কাজ শেষ হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে এখন চট্টগ্রামের বেশিরভাগ খাল ও নালা। কাজ করার জন্য খালগুলোতে যে মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে সেগুলো অপসারণ করা হলে পানি কিছুটা দ্রুত নামতো। চট্টগ্রাম মূলত অপরিকল্পিত নগরায়নের জন্য জলাবদ্ধতা হচ্ছে। ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যান পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতার এতো দুর্ভোগ হতো না।
জলাবদ্ধতায় মানুষ কষ্টে আছে, তা কমিয়ে আনার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। এখানে সিটি করপোরেশন কী করবে। কাজ করতে গেলেই তো টাকা লাগবে। তারপরও আমরা যা কাজ করতে পারি তা করছি। আমাদের নিজস্ব এস্কেভেটর দিয়ে মাটি তুলছি। নালা-নদর্মা পরিষ্কার করছি।
মেয়রের একান্ত সচিব (পিএস) আবুল হাশেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেয়র দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম নগর ভবনের টাইগার পাস কার্যালয়ে এসেছেন।
সভা স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন স্কুল কমিটির পরিচলনা পর্ষদের সভা ছিল আজ। স্কুল কমিটির সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবেন। আবার আজকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠছে। তাদের সভায় আসতে অসুবিধা হবে বিধায় সভাটি স্থগিত করা হয়েছে।
কেএম/জেডএস